সম্পূর্ন বাংলা হরর ম্যাগাজিন
মাসিক ভৌতিক
নভেম্বর ২০১১
সংখ্যাঃ ৩
বর্ষঃ ১
আমাদের কথা
প্রিয় বন্ধুরা ।আমরা অক্টোবর ২০১১ এ তোমাদের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়ে অনেক অনেক আনন্দিত ।গত সংখ্যাটি শেষ হিসাব অনুযায়ী uhtml টি ৩০০বার ডাউনলোড হয়েছে এবং অনেক অনেক মানুষ অনলাইনে ও PDF ডাউনলোড করে পড়েছে ।তাই তো প্রতিবারের মত এবারও 'মাসিক ভৌতিক'এর তৃতীয় সংখ্যায় তোমাদের জন্য নিয়ে এলাম মজার মজার সব গল্পের ঢালি । এসো এবার জানি এবারের সংখ্যায় কাদের কাদের অবদান রয়েছে । এবার Uhtml এবং অনলাইন কপি সম্পাদনা করেছে মোঃ জাবেদ ভুঁইয়া । PDF কপি তৈরী করেছে আমাদের সকলের প্রিয় ও পরিচিত মুখ কুয়াশা ভাই । আমাদের পত্রিকার সভাপতি মোঃ ইমরান ভুঁইয়া এবং মোঃ আকাশ ভুঁইয়া । সবচেয়ে অধিক অবদান লেখক ও পাঠক মহলের ।
সম্পুর্ন হরর উপন্যাসঃ বন্ধু নিখিলেস
সাখ্যাওয়াত হোসাইন
বৈশাখ মাসের দুপুর । মাথার উপড় সূর্য যেন খসে পরছে । বাতাস না তো লু হাওয়া । শরীরে লাগলে পুড়েপুড়ে যাচ্ছে । আমার আর রন্জুর শরীর দিয়ে ঘাম টপ টপ করে পরছে । তোজার মধ্যে কোন ভাবান্তর নেই ।বাস থেকে নেমে একটা ভ্যাননিয়ে ছিলাম । সেটাও অধেক পথ এসে বললো আর যাবে না । যাবেই বা কি করে বলা নেই কওয়া নেই সামনের চাকাটা হঠাৎই ভেঙ্গে দুমরে মুচরে গেল । অজ্ঞতা বাকি পথ টুকু পায়ে হেঁটেই হওনাহলাম । কৈই ভেবে ছিলাম অনেক দিন পর গ্রামে ভ্রমনটা ফাটাফাটি হবে । না এখন দেখছি গরমে আর জার্নিতেই অবস্হা টাইট । দু’পাশের ধান ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে একে বেঁকে চলে যাওয়া রাস্তা ধরে আমরা চলেছি । গন্তব্য আমাদের হারিয়ে যাওয়া বন্ধু নিখিলেশের বাড়ি । হারিয়ে যাওয়া বন্ধু বলছি এ কারনে যে , আমরা তখন মাত্র সেকেন্ড ইয়ার শেষ করেছি । আমি ; রন্জু,নিখিলেস আর তোজাম্মেল জহুরুল হক হলের ৩২৭ নম্বরে থাকি । চার জনে দস্তির চুড়ান্তু । নিজেদের আন্ডার ওয়ারটা ছাড়া আর বাদবাকি সব কিছু ভাগা ভাগি করে ব্যবহার করি । কে কার জন্য কতোটা করতে পারছি সেটাই ছিল মুখ্য বিষয় । ছাত্র হিসাবের চার জন তুখোর । পাল্লা দিয়ে চলে পড়া শুনা। এ সেমিষ্টারে আমি ফাস্টতো পরেরটায় রন্জু ,তার পরেরটায় নিখিলেস । ব্যতিক্রম শুধু তোজা মানে তোজাম্মেল । সব সেমিষ্টারে থার্ড । এর কারন হলো , শালায় পড়াশুনাখুব একটা করে না । আমাদেরতৈরি নোট দিয়ে দিব্ব্যি চালিয়ে যাচ্ছিল । তবে ছাত্র হিসাবে তোজাও তুখোর ।
কোন একটি বিষয় ওকে দু’বার পড়তে শুনিনি ।সেই সময় এক রাতে নিখিলেস ব্যাগ টেগ গুছিয়ে রাড়িতে চলে গেল । আর ফিরলোনা । ওর এভাবে চলে যাওয়াটাকে আমরা মেনে নিতে পারলাম না। অনেক খোঁজা খুঁজির পরে ও যখন ওকে পেলাম না তখন আমরা ঠিক করলাম শালাকে খুঁজে বেড় করে তবেই ছাড়বো। এর মধ্যে ওর একটা চিঠি পেয়েছি -তাতে ও এভাবে চলেযাবার জন্য ক্ষমা চেয়েছে । কিন্তু ক্ষমা আমরা করতেপারলাম না । এভাবে একটি ছেলে লেখা পড়া বন্ধ করে চেলে যেতে পারে না । নিশ্চই এর পেছনে কোন কার আছে । আর আমরা এখন চলেছি সেই কারন বেড় করতে । কিছুটা পথ হাঁটার পরেই রন্জু বসে পরলো -না আমি আর যাচ্ছি না । মালোয়ানটারে আমার কোন দরকার নাই । আমি আর হাঁটতে পারমু না । তোরা খুইজা নিয়া আয় আমি হারামজাদারে দু’ইডা জুতার বারি মারি । নিখিলেস কে আমরা রেগে গেলে মালাউন বলে খেপাতাম । আমার দু’ইডাও মাইরা দিস বলে ওর পাশে বসে পরলো তোজা । সালা এতো দু’র জানলে কে আসতো ? মোনালিসার সঙ্গে পককোন খেতে খেতে ওর ফ্লাটে বসে আড্ডা মারতাম না আইছি গাইয়া ভুতটারে খুঁজতে । রন্জু পকেট থেকেসিগারেট বেড় করতে করতে বললো । তুমি কি মামা শুধু আড্ডাতেই ক্ষান্ত হইতা এইডা আংগোরে বিশ্বাস করতে কও ? তোজা আমার দিকেচেয়ে চোখ মারে । ঐ শালা আমার বউ এর লগে আমি আড্ডা মারি না অন্য কিছু করি তোর বাপের কি ? না , মামা আমার বাপের এখন আর কিছু না । বুড়া হইয়া গেছে । তয় মামা আমার কিন্তু অনেক কিছু ; বলে তোজাম্মেল ঝট করে সড়ে যায়। আবে যা , তোর ঐ কালা বগের ঠ্যাং সুস্মিতার সঙ্গে যাইয়া যা করবি কর । মোনারদিকে চোখ দিবি তো চোখ তুইলা লামু । রন্জু মাটিরএকটা ঢিল তুলে তোজাকে ছুড়ে পারে । তোজা বসে পরাতে ঢিলটা ওর মাথার উপড় দিয়ে গিয়ে ঝোপের মধ্যে পরে । সঙ্গে সঙ্গে কেউ একেজন বলে উঠে -ওই ঢিল মারে কে রে ? ঝোপের ভেতর থেকে হঠাৎ শব্দ আসায় আমরা হকচোকিয়ে গেলাম । আমি বললাম - আমরা ; আমরা কারা ? ঝোপের ভেতর থেকে কেউ একজন বলে উঠে । আপনি কে ? ঝোপের ভিতরে কিকরেন ? রন্জু পাল্টা প্রশ্ন করে । কি করি মানে ? ওই তোরা কারারে ? বলতে বলতে ঝোপেরভেতরে থেকে কালো করে একটালোক বেড় হয়ে আসে । হাতে একটা রাম দা । আমি যখন দৌড় দেবো কিনা ভাবছি । রন্জু তখন দু’পা সামনে এগিয়ে গিয়ে বলে - চাচা সালাম - আমারা শহর থেইকা আইছি । হেইডা তো দেইখাই বোঝা যায়। তয় ঢিল মারছো কেন ? সন্মধন তুই থেকে তুমিতে আসায় আমার সাহস ফিরে আসে আমি বলি- এক বন্ধুর খোঁজেএসেছি । ঢিলটা আপনাকে মারা হয়নি । ভুল করে ওদিকে চলে গেছে । আর আপনিযে ঝোপরে ভেতর আছেন তা ও আমরা বুঝতে পারিনি । চোখ কান খোলা না রাখলে বুঝবা কেমনে ? তয় কার বাড়ী যাইবা কইলা ? মানে আমরা এক বন্ধুরে খুঁজতে এসেছি । আরে বাবা হেয় তো কোন না কোন বাড়ীতেই থাকে ? হেই বাড়ীর নাম কি ? সেটা তো বলতে পারবো না । তবে আমাদের বন্ধুর নাম নিখিলেস চৌধুরী । ইউনিভারসিটির রেজি:ষ্টারে এই জল্লা গ্রামের কথাই লেখা আছে । এটা তো জল্লা গ্রামই নাকি? আমি পকেট থেকে নিখিলেসের ঠিকানা বেড় করতে করতে বলি । কি নাম কইলা নিখিলেস চৌধুরী ? আমার মনে হলো লোকটা একটু অবাক হয়েই নামটা উচ্র্চারন করলো । জ্বি । আমি মাথা নাড়ালাম । এটা কি জল্লা গ্রাম না? হ ; এইটা জল্লা গ্রামই । গ্রামের ভেতরেই চৌধুরী বাড়ি । যাও তোমরা । এই পথ ধইরা সোজা চইলা যাও । লোকটা আর দাঁড়ালো না । অনেকটা তারা হুরা করেই ঝোপের আড়ালে চেলে গেল । আমরা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম । কি হইলো রে মামা ? রন্জু আমার কাধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলো । বুঝলাম না আমি অবাক হয়ে উত্তর দিলাম । আমার মনে হয় ভয় খাইছে । তোজা হাসতে হাসতে বললো । কিসের ভয় আমি কপাল কুচকে জিজ্ঞেস করলাম । আবে আংগোরে না , মনে হয় চৌধুরী বাড়ি যামু শুইনা ভয় খাইছে । তোজা হাসছে । চিকার মতো হাসছোস কেন - চৌধুরী বাড়ি নাম শুইনা ভয়পাইবো কেন ? রন্জু তোজার মাথায় চাটি মেরে জিজ্ঞেস করে । আর কেন জানছস না চৌধুরীরাজমিদার আর জমিদারগো মাইনসে কেন ভয় পাইতো । তোজা জ্ঞান দিতে শুরু করেছে । কেন ? কপাল কুচকে রন্জু জিজ্ঞেস করে । আবে শালায় অত্যাচারের জন্য । এইডাও বুঝোস না ? যা । সেই দিন আর নাই । রন্জু নাক ছিটকায় । আহা গবেষনা বন্ধ কর চল সামনে হাঁটি । আমার খিদায়পেট চো চো করছে । আমি পেটে হাত দিয়ে বললাম । আমারও খিদা লাগছে । তোজা বললো । চল পা চালাই । একবার দেখমু না চাচায় ঝোপের আড়ালে কি করে ? রন্জু ঝোপের দিকে তাকিয়ে বলে । বাদ দে তো । যা ইচ্ছা করুক । আমি রন্জুর হাত টেনে হাটতে লাগলাম । (২) জল্লা গ্রামটা বেশ বড় । আমারা প্রথমে গিয়ে পৌছালাম বাজারে । বাজারটা প্রায় লোক শূন্য বলা চলে । দু’তিনটা দোকানখোলা । বাকি সব গুলো বন্ধ। ঘরিতে তখন সাড়ে চারটা বাজে । কালো কাঠের তক্কারবেড়ায় ঘেরা একটা হোটেলে ডুকে ভাতের অডার দিলাম । হোটেলের ক্যাশে ১০ কি ১২ বছরের একটি ছেলে বসে ছিল । আমরা ডুকে বসতেই ছেলেটাএসে টেবিলে তিনটা প্লেট দিয়ে বললো কি খাবেন ? কি কি আছে । আমি জিজ্ঞেস করলাম । এখানেই সব । হাতের ডান পাশে একটা গ্লাস ভাঙা সোকেসের মধ্যে ছোট ছোট তিনটা থালা । তার একটাতে ছোট মাছের বুনা , মাঝ খানেরটাতে কি একটা মাংস আর শেষেরটাতে হাতের পান্জার মতো লম্বা কি একটা মাছ ।
আমার নাম পিচ্চি না মাহাবুব । ঐডা পুয়া মাছ । বাব্বা ! তো বাবা মাহাবুবপুয়া মাছটা আবার কি ? তোজা আমার দিকে তাকায় । মনে হয় পোয়া মাছ হবে । আমি মাছের দিকে তাকিয়ে বলি । হ । পুয়া মাছ । ছেলেটা বলে । আর ঐডা কি ? রন্জু মাঝখানের থালাটা দেখিয়ে জিজ্ঞেস করে । ঐ ডা গরুর মাংস । আর এইডা কাচকি বুনা । কুনডা দিমু? সবই দে । সব খাইবেন ? ছেলেটা অবাক হয়ে তাকায় । আরে বাবা তিনডা বাটিতে তিনজনরে দে । যেইডা ভাল লাগে হেইডা বেশি খামু । খেতে শুরু করে বুঝলাম । খাবার খাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না । এমন ঝালযে নাক মুখ দিয়ে পানি ঝরতে লাগলো । মাংসটা কোন অবস্হাতেই নরম করতে পারলাম না । খাওয়ার পালা শেষ করে আমরা সিগারেট ধরালাম । মাহাবুব টেবিল থেকে প্লেট নিয়ে যাচ্ছে । তুই কি নিখিলেসকে চিনিস ?রন্জু জিজ্ঞেস করে । না । মাহাবুব টেবিল মুছতেমুছতে উত্তর দেয় । চৌধুরী বাড়ি চিনোস ? হু ; চিনি । আমরা ঐ বাড়ী যামু । ঐ বাড়ী যাইবেন ? ছেলেটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে । হু । মনে হইল অবাক হইছোস? ঐ বাড়িতে কেউ থাকেনি ? কার কাছে যাইবেন ? নিখিলেসের কাছে যামু । রন্জু ছেলেটার সঙ্গে কথা বলছে । ঐ নামে কাউরে চিনি না । ছেলেটা আর দাঁড়ায় না । মহাবুব চা হইবো রে ? তোজাছেলেটার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে । না । কোথাও থেউকা আইনা দিতে পারবি না ? না । আপনারা উডেন হোডোল বন্ধ করমু । বলোস কি ? আমি চমকে উঠে বললাম । এখন বাজে কয়টা যেহোটেল বন্ধ করবি ? আমি ঘড়ি দেললাম সোয়া পাঁচটা বাজে । আপনেরা উডেন । তোর বিল দে । ১০০ টাহা দেন । এহানে যা খাইবেন পয়ত্রিশ টাহা । তিন জনে হইছে ১০৫ টাহা । পাচঁ টাহা মাপ । ১০০ টাহাদেন । ছেলেটা সত্যি সত্যি হোটেলের ঝাপ নামাতে লাগলো । আমরা টাকা দিয়ে বেড় হয়ে এলাম । বেড় হবার আগে জেনে নিলাম চৌধুরী বাড়ি যাবার রাস্তা । হোটেল থেকে বেড় হয়ে দেকি যে দুটো দোকান খোলা ছিল সেগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে । আমি অবাক হয়ে বললাম- কোন ভুতরা জায়গায় এলামরে বাবা । মাহাবুবের দেখানো পথ ধরে আমরা হাঁটতে হাঁটতে একটা সাকোর কাছে এসে পৌছালাম । আমরা যে রাস্তাটা দিয়ে হাটছি সেটা মাটির একটা রাস্তা ।অতি মাত্রায় নির্জন । কেমন গা ছমছম করে । তারউপরে সন্ধ্যা হয়ে আসছে । রাত্রিরে কোথায় থাকবো তা ভেবে আমি ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে আছি । ওদের দু’জনের মধ্যে কোন চিন্তা দেখছি না । দু’জনইবেশ নিশ্চিন্তে হাঁটছে । তোজা একটু পর পর ভাঙা গলায় গান গাইছে -সোয়া চাঁদ পাখি আমার সোয়া চাঁদ..............................। ( ৩) সাকোটা পার হয়ে আমরা যখন এপারে এসে দাঁড়ালাম । তখনকোথাও থেকে অস্পস্ট ভাবে আযানের শব্দ এসে কানে লাগলো । সেই সঙ্গে ঠুং ঠুং ঘন্টির শব্দও শুনতে পেলাম । সাকো থেকে চিকন দু’টো পথ দু’দিকে চলে গেছে। আমরা কোন পথটা দিয়ে যাবো বুঝতে না পেরে দাঁড়িয়ে রইলাম । দু’টো পথই ঝাপসা দেখাচ্ছে । সন্ধ্যা হয়ে গেছে । ঝি ঝিপোকাদের ডাক শোনা যাচ্ছে । কি রে কোন দিকে যামু ? রন্জু জিজ্ঞেস করলো । বুঝতে পারছি না । দুটো পথের দিকে ভালকরে তাকিয়ে আমি বললাম - ডান দিকের পথটা বেশি পরিস্কার মনে হচ্ছে । মনে হয় এগিকটা দিয়ে লোক চালাচল আছে এদিকটা দিয়েই চল । ঠিক আছে চল । রন্জুর বলা শেষে যেই পা বাড়াবো ওমনি প্রায় হুট করে বাম পাশের রাস্তাটা থেকে একটা লোক উদয় হলো । ধুতি ফোতুয়া পরে আছে । আমাদেরকে দেখে বললো -নমস্কার । আমরা মাথা নাড়ালাম । আপনারা কিনিখিলেস বাবুর কাছে এসেছেন ? আমরা সবাই প্রায়এক সঙ্গে মাথা নেড়ে হ্যা বললাম । চলুন আমার সাথে বাবু আপনাদের নিতে পাঠিয়েছেন । আমাদের নিতে এসেছেন আপনি? আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম । আপনারা ঢাকা থেকে এসেছেন তো ? হ্যা । বাবুর আপনাদের সঙ্গে লেখা পড়া করতেন তো ? কে নিখিলেস ? জি । আমি তেনার কথাই বলছি। হ্যা । ও আমাদেরে সঙ্গেই পড়তো । তা হলেতো ঠিকই আছে । আমি আপনাদেরই নিতে এসেছি । তিনি আপনাদের এগিয়ে নিতে পাঠিয়েছেন । দেন তো বাবুরা আপনাদের ব্যাগগুলো আমাকে দেন । এইতোরা কৈই গেলি ? অন্ধকার থেকে বল্লম হাতে কালো মোটা দুটো লোক বেড় হয়ে এলো । নে নে বাবুদের ব্যাগ গুলোনিয়ে নে । তা বাবুরা আমারনা হেমন্ত । আমি বাবুর খাসলোক হুকুমের গোলাম । আপনারা নিশ্চিন্তে আমার সঙ্গে চুলুন । কিন্তু নিখিলেস কি ভাবে জানলো যে আমরা আসছি ? তোজা হেমন্তের দিকে তাকিয়ে বললো । তিনি সব জানেন বাবু । না জানলে কি চলে ? এতো বড় জমিদারী চালানো কি চাট্রিখানি কথা । কি বললে ছাগলটা জমিদার নাকি ? রন্জু কথাটা বলার সঙ্গে সঙ্গে মোটা লোক দুটো রন্জুকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলো । কি বললি তুই বাবুকে কি বললি বলে দু’জনই রন্জুর বুক বরাবর বল্লম তাক করলো। আরে করে কি ?করে কি ? বলে আমি হেমন্তর দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠলাম । এ্যই মুখ্যর দল তোরা থাম । তেনারা বাবুর বন্ধু মানুষ । তেনারা বাবুকে যাইচ্ছে বলতে পারে ।সর সর পোড়ামুখোরা সড়ে যা বলছি । কয়েক মুহুর্ত তাকিয়ে থেকে দু’জন সরে গেল । তারপর আমাদের ব্যাগ গুলো তুলে নিয়ে হাটতে লাগলো । রন্জুর ব্যাগটা পরে রইল মাটিতে । ওরা সড়ে যেতেই আমরা দ্রুত গিয়ে রন্জুকে মাটি থেকে তুলে নিলাম । হেমন্ত রন্জুর ব্যাগটা মাটি থেকে তুলতে তুলতে বললো -বাবুরা কিছু মনে মনে নেবেন না । এরা গ্রাম্য মুর্খ্য-সুখ্য মানুষ কিছু বুঝে না । রন্জু ভেবাচেকা খেয়ে গেছে । ও উঠে প্যান্ট ঝাড়তে লাগলো ।
চলেন বাবুরা । তারা তারি পা চালান । তিনি আপনাদের প্রতিক্ষায় আছেন । এমন সময় কোথা থেকে অ----উ--------উ করে শেয়ালের ডাক শুনা গেলো । আমারা দ্রুত পা চালালাম ।হেমন্ত যেন উড়ে চলছে । আমরা বারবার পিছিয়ে পড়ছি । রন্জ একদম চুপ মেরে গেছে । কোন কথা বলছে না । রাস্তার দু’পাশে ঘন ঝোপ জঙ্গল । হঠাৎ আমার কাছে মনে হলো আমাদের ফলো করে কারা যেন ঝোপ জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ছুটে চলছে । দু‘ একবার তাকিয়ে আমি দেখতেচেষ্টা করলাম । কিন্তু নিকোষ কালো অন্ধকার ছাড়া কিছুই চোখে পরলো না । তোজার দিকে তাকালাম ও’ও আমার দিকে তাকাল । হেমন্তপ্রায় উধাও হয়ে গেছে । আমরা প্রায় আন্দাযের উপড় হাটছি । এক সময় চোখে কিছুনা দেখে আমি ডাক দিলাম - হেমন্ত বাবু ? হেমন্ত বাবু ? প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আমার পেছন থেকে জবাব এলো -এ্যাই যে বাবু আমি । একটু পিছিয়ে পরেছিলাম । আপনি পিছিয়ে পরেছিলেন ? আপনি তো আমাদের সামনে সামনে হাঁটছিলেন । তোজা আর আমি প্রায় এক সাথে বলেউঠলাম । কৈই বাবুরা আমি তো পেছনেইছিলাম । হয়তো অন্ধকারে ঠাওর করতে পারেননি । চলেনবাবুরা চলেন দেরি হয়ে যাচ্ছে আবার ছুটতে লাগলো । হেমন্ত এখটু আস্তে হাটেন না । আমাদের হাঁটতে তো কষ্ট হচ্ছে । জ্বি বাবু । বলে হেমন্ত প্রায় আমার গা ঘেষে হাটতেলাগলো । আরো প্রায় আধা ঘন্টা হাটার পর আমরা বিশাল একটা বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়ালাম । বাড়ী না বলে একে প্রাসাদ বলাই ভাল। বিশাল গেট ঢেলে ডুকতেই বিশাল উঠান উঠানের শেষ মাথায় প্রাসাদের ভেতরে ঢুকার সিঁড়ি । সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আছে নিখিলেস । ওরদুপাশে আরো দু’জন বাতি হাতে দাঁড়িয়ে আছে । আমারাকাছে যেতেই নিখিলেস দু’সিড়ি নেমে এলো । একে একে আমরা সবাই হাত মেলালাম । যে নিখিলেশের জন্য এতোটা ছুটে আসা সে নিখিলেসকে যোনো আমরা পেলাম না । কোথায় জানি সুতা ছিড়ে যাওয়ার টের পেলাম । আসরে রন্জুর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটাই পুরো পরিস্থিকে পাল্টে দিয়েছে । নিখিলেস কিন্তু আমাদের সঙ্গে যথেষ্ট স্বাভাবিক আচড়ন করার চেষ্টা করলো -রন্জুর মুখ কালো দেখে নিখিলেস ওর কাঁধে হাত রেখে বললো- তুই মন খারাপ করিস না । দেখ আমি জানোয়ারটাকে কি করি । তারপরেই হাক দিলো কৈই রে জানোয়ার দু’টো কৈই ? উঠানের এক পাশ থেকে সেই লোক দুটো বেড় হয়ে এলো - ওদের কে দেখেই নিখিলেস চিৎকার করে উঠলো -তোরা আমার বন্ধুর শরীরে হাত দিছোস কোন সাহসে । নিখিলেসের এমন রুপ আমরা কোন দিন দেখিনি । লোক দুটো মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে । নিখিলেস ওরডান হাতটা মেলে ধরলো সঙ্গে সঙ্গে পাশে দাঁড়িয়ে একজন একটা তরবারি ওর হাতে তুলে দিল । বাতির আলো খোলা তরবারিটা যেন রক্তের নেশায় চকচক করে উঠলো । আমরা বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছি । কিছু বুঝে উঠার আগেই । নিখিলেস সিঁড়ি থেকে নেমে লোক দুটৌর কাছে গিয়ে দাড়াঁল । তারপর যে লোকটা রন্জুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলো সে লোকটাকে তরোয়ালের আগা দিয়ে ঠেলে আলাদা করে ফেললো । অজানা কোন আসংন্কায় আমি ডাক দিলাম নিখি ? নিখিলেস আমার দিকেতাকিয়ে হাসলো । আমি বুঝলাম নিখিলেস লোকটাকে ভয় দেখিয়ে রন্জুকে খুশি করতে চেষ্টা করছে । নিখিলেস লোকটাকে বললো বসে পর । লোকটা বিনা বাক্যে মাথা নীচু বসে পরলো । নিখিলেস লোকটার ঘাড়ে তরোয়ালটা রেখে বললো -আমার বন্ধুর শরীরে হাত দেয়ার অর্থ হচ্চে মৃত্যু । আমি বুঝেছি নিখি মজা করছে । হঠাৎ নিখি বলে উঠলো রন্জু এটা তোর জন্য -জয় মা কালি বলেই নিখিলেসতরোয়ালটা মাথার উপরে তুলে নীচে নামিয়ে আনলো । আমারা কিছু বুঝে উঠার আগেই লোকটার মাথা শরীর থেকে ছিটকে মাটিতে পরলো ।তীরের বেগে বের হওয়া রক্তএসে আমাদের শরীরে লাগলো ।আমরা সবাই ভয়ে আতন্কে এক সঙ্গে চিৎকার করে উঠলাম ।আমাদের পেছনে দাঁড়িয় থাকা সবাই এক সঙ্গে বলে উঠলো জয় মা কালি । আমি বমি করে দিলাম ।
খুলে দেবো বাবু ? দু’জন মহিলার একজন বললো । দিননা প্লিজ । খুব গরম লাগছে । একজন এগিয়ে এসে আমার উপড় দিয়ে জানালা খুলে দিতে লাগলো । আমি চেয়ার থেকে উঠে যাবার কোন সুযোগ পেলাম না । মহিলা হাত উঁচিয়ে যখন জানালার উপরের সিটকিনিটা খুলছিল তখন তার শরীরটা আমার হাতের সঙ্গে প্রায় চেপে থাকলো । আমি অসস্থির মধ্যে পরে গেলাম । আমার মনে হলো মহিলা ইচ্ছা করেইএকটু বেশি সময় নিয়ে জানালাটা খুললো । জানালা খোলা শেষে মহিলা আমার দিকে তাকিয়ে হেসে সড়ে গেল। আমি কেমন অসুস্থি নিয়ে রন্জু আর তোজার দিকে তাকালাম । দেখলাম ব্যাপারটা ওরা যেন খেয়ালাই করলো না । জানালাটা খুলতেই দমকা একটা হাওয়া এসে আমাদের চোখে মুখে লাগলো । অন্ধকারের মধ্যেও দেখতে পেলাম সামনে একটা পুকুর ।হালকা চাঁদের আলোয় পানি চকচক করছে । হাসনা হেনা ফুলের গন্ধ এসে নাকে লাগলো । দারুন দৃশ্য তো । বলে তোজা জানালার কাছে এগিয়ে গেল । আমরা মুগ্ধ হয়ে বাহিরে তাকিয়ে রইলাম । হঠাৎ মহিলাদের একজন বলে উঠলো -বাবু বেশি রাতে জানালা খোলা রাখবেন না । কেন ? আমি জিজ্ঞেস করলাম । এমনি বাবু ! নানান জিনিষ আছে । কি নানান জিনিষ ? আমি আবার জানতে চাইলাম । সে আমরা বলতে পারবো না । আমরা তাহলে এখন যাই । বলেদু’জনই ছুটে বেড় হয়ে গেল । রন্জু উঠে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিল । আমরা তিনজন খাটে পা তুলে আরাম করে বসলাম । নানা বিষয় কথা বলতে বলতে চোখ লেগে এসেছিল । হঠাৎ দরজায় খুট খুট শব্দ হতে আমি আর রন্জু উঠে বসলাম । দু’জন দু’জনার মুখচাইয়া করছি কে হতে পারে তা ভেবে । এমন সময় দরজাটাআপনা আপনি খুলে গেল - ভেতরে ডুকলো নিখিলেস । আমি অবাক হলাম সিটকিনি লাগানো দরজা আপনা আপনি খুললো কি ভাবে ? আমাদের বসে থাকতে দেখে নিখি বললো-কিরে ঘুমিয়ে পরেছিলি নাকি ? তারপর ও খোলা জানালাটার দিকে একবার তাকাল । জানালা দিয়ে হু হু করে বাতাস আসছে । সারা দিন জার্নি করেছি তো তাই মনে হয় চোখ লেগে এসেছিল- রন্জু হাই তুলতে তুলতে বললো । তা তুই কি মনে করে ? তোদের বউ দি এসেছে । বলিস কি ? তুই বিয়েও করেছিস নাকি ? বলে আমরা বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালাম । তোজা ও উঠে গেছে । তা আসতে বল বউদি কে ভেতরে আসতে বল । তমা ভেতরে আস । নিখিলেস দরজার দিকে তাকিয়ে বললো । মাথায় কাপড় দেয়া খুব ফর্সা গোল চেহারার বিশ পচিশ বছরের শাড়ি পরা একটামেয়ে ভেতরে ডুকলো । পেছনেআর দু’জন মেয়ে । তাদের একজন হাতে একটা ট্রে ধরে আছে । তাতে চার পাঁচটি গ্লাসে লাল রঙের কিছু একটা পর্দাথ । খুব সম্ভব শরবত হবে । আমরা এক সঙ্গে সবাই বললাম-বউদি নমস্কার । নিখিলেসের বউ হেসে বললো-নমস্কার । তারপর আমাদের হাতে একটা করে গ্লাস তুলে দিয়ে বললো -আপনাদের জন্য ডালিমের শরবত , আমি নিজে তৈরি করে এনেছি , পান করুন ভাল লাগবে । আমরা শরবত মুখে দিলাম । নিখিলেশ ও নিলো এক গ্লাস । ও ডগডগ করে পুরো শরবতটাএকবারে শেষ করে ফেললো । আমার শরবতটা মুখে দেবার পর মনে হলো নোনা কিছু একটা মুখে দিয়েছি । আমি খেতে পারলাম না । নিখিলেসের বউ এর অনুরোধে আর দু’ডোক গিলে রেখে দিলাম । নিখিলেস কাল কথা হবে বলে বউসহ চলে গেল । আমার ভেতটা ক্যামন গুলাতে লাগলো । আমি টেবিলের উপড়ে রাখা জগ থেকে পানি খেলাম । জানালাদিয়ে তাকিয়ে দেখি পুকুরের পানি কেমন চকচক করছে । হঠাৎ একটা ঝোপের দিকে চোখ যেতেই দেখলাম একটা কুকুরের মতো কি যেন বসে আছে । মুখটা লম্বা । চোখ দুটো জ্বল জ্বল করে জ্বলছে । আমি রন্জুকে দেখিয়ে বললাম ওটা কিরে ? কৈই ?ঐ যে বা দিকের ঝোপের পাশেবসে আছে কুকুরের মতো । আমি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললাম । মনে হচ্ছে তো কুকুরই । কিন্তু কুকুরের মুখ কি এতো লম্বা হয় ? তোজা আমারমনের কথাটাই বললো । হা মুখটাতো ওতি লম্বা মনেহচ্ছে । নেকড়ে টেকরে নাতো? রন্জু একটু চিন্তিত ভাবে বললো । এখানে নেকড়ে আসবে কোথা থেকে ? আমি কি করে বললো কোথা থেকে এসেছে ? মনে হলো তাইবললাম । এমনিতে যে ভুতরা পরিবেশে আছি তাতে কুকুর না হয়ে এপরিবেশে নেকড়েই মানায় । রন্জু কিন্চিত হেসে বললো । ঐ দেখ আরেকটা তোজা হাত দিয়ে দেখালো । আমরা অবাক হয়ে দেখলাম সত্যিই আরেক এসে আগেরটার পাশে বসেছে ।তার পর আরেকটা ,তারপর আরেকটা ; এমন করে প্রায় শ’খানেক নেকড়ে এসে পুরো পুকুরটাকে ঘিরে গোল হয়ে বসলো । আমারা সবাই বড় বড় চোখ করে দেখছি । কারো মুখে কোন কথা সরছে না । এখন বুঝতে পারলাম মহিলা কাদের কথা বলেছিল যে,তেনারা ছিড়ে টুকরো টুকরোকরে ফেলবে । হঠাৎ নেকড়েগুলো আকাশের দিকে মুখ করে আ-----------উ-------উ----উ করে একসঙ্গে ডেকে উঠলো । আমাদের সবার কানে তালা লেগে যাবার যোগার হয়েছে ।আমরা পরস্পর মুখ চাওয়া চায়ি করলাম । আকাশের দিকেতাকিয়ে দেখি চাঁদটা মেঘে ডেকে গেছে হাঠাৎ করেই যেনঅন্ধকার নেমে এলো । রন্জুতারাহুরো করে জানলাটা বন্ধ করে দিলো
পেছন থেকে কয়েক জন আমাদেরশক্ত করে ধরে ভেতরে নিয়ে যেতে লাগলো । আমি পেছন ফিরে দেখলাম -লোকটার কাটা শরীরটা কাটা মাছের মতো লাফাচ্ছে । আমি জ্ঞানহারিয়ে মাটিতে পরে গেলাম । (৪) যখন জ্ঞান ফিরে পেলাম তখনদেখি আমি বিছানায় শুয়ে আছি । আমাকে ঘিরে বসে আছেতোজা ,আর রন্জু মেঝেতে একটা হাতলওয়ালা চেয়ারে বসে আছে নিখি মানে নিখিলেস । পরনে দুধ সাদা পান্জবি আর ধৌতি । দেয়ালেএকটা মশাল জ্বলছে । কি রে কেমন বোধ করছিস ? আমাকে তাকাতে দেখে নিখিলেস জিজ্ঞেস করলো । আমি কিছু না বলে রন্জু আরতোজার দিকে তাকালাম । ওদের মুখ থমথমে হয়ে আছে । শুন ! গরম পানি দেওয়া হয়েছে যা গোসল করে ফ্রেস হয়ে নে । তোদের সঙ্গে অনেক কথা আছে ; আমাদের সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো নিখি । তুই একটা মানুষ মেরে ফেললি নিখি ? আমি বলে উঠলাম । ওরা জন্মেছেই মরার জন্য ।সব পরে বলবো , যা গোসল করেখেতে আয় ; বলে নিখিলেস হাতে তালি দিলো । সঙ্গে সঙ্গে দু’জন মহিলা এসে ঘরে ডুকলো । নিখি বললো ওদের গোসল খানায় নিয়ে যাও। ভাল করে সেবা করো । সাবধান ওরা আমার বন্ধু । আমরা উঠে মেয়ে দুটোর পেছনপেছন হাঁটতে লাগলাম । মনেহচ্ছে সারা শরীর অবস হয়ে আছে । কোথায় পা ফেলছি বুঝতে পারছি না । রন্জু আমার পাশ দিয়ে হাঁটছিল আমি ওর কাঁদে হাত রাখলাম । অনেক বদলে গেছে রে । অনেকবদলে গেছে ,ফিসফিস করে বললো রন্জু । ঘর থেকে বেড়হয়ে বারান্দা দিয়ে যাবার সময় দেখলাম দু’জন লোক উঠানটা পানি দিয়ে ধুচ্ছে । আমার মাথা আবারও গুলিয়েউঠলো । ধৈর্য্য ধর । আমাদের এখানথেকে পালাতে হবে, এরা কেউনরমাল না । রন্জু খুব নীচু স্বরে কথাটা বললেও সামনে হাঁটতে থাকা মহিলাটা আমাদের দিকে ফিরে বললো -সে চিন্তা ভুলেও করবেন না বাবুরা । তেনারা ছিড়ে টুকরা টুকরা কইরা ফেলবে । ভুল কইরেন না । এখান থেকে পালানোর কোন পথ নাই । মহিলাটা আমার কানের কাছে মুখ এনে বললো -কেমন একটা বিশ্রী গন্ধ এসে নাকে লাগলো । আমি মুখ সরিয়ে নিলাম । হাঁটতে হাঁটতে আমরা বিশাল একটা গোসল খানায় এসে দাঁড়ালাম । দুটো বড় বড় বাথটাবে পানি টলমল করছে । বার্থটাবের পাশে পরপর সাজানো চারটে পিতলের ঘটি রাখা । মহিলা দু’টো আমাদের জামা খুলে দিতে উদ্দ্যত হলে আমরা সড়ে গেলাম । তোজা বললো -আপনারা বাহিরে গিয়ে দাঁড়ান আমরা গোসল শেষে আপনাদের ডাকবো । মহিলা দুজনে একে অপরের দিকে তাকিয়ে হেসে বেড় হয়ে গেল । রন্জু বললো - এরা স্বাভাবিক না। এখন বুঝতে পারছি ,চৌধুরী বাড়ির নাম শুনার পরে সবাই কেন এমন চমক চমকে উঠছিল । তয় এখন কি করমু ? তোজা জিজ্ঞেস করে । কি আর ওরা যা বলে তাই করমু , ভায়ে ভায়ে থাকতে হবে । সুযোগ এলে প্রথম সুযোগেই পালামু । কিন্তু ঐ মহিলা যে কইলো............... আমি রন্জুর গা ঘেষে দাঁড়িয়ে বললাম । আরে রাখ ; অমন কথা ভয় দেখানোর জন্য অনেকে কয় । আমাদের ভয় পেলে চলবে না ।মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে । আমার কিন্তু মনে হয় না মহিলা মিথ্যা বলেছে , তোজা আমার কথার সমর্থন দেয় ; একটু থেমে আবার বলে - আর দেখোছ না একেক জন ক্যামন অন্ধকারে মিশে থাকে ? ডাক দিলে সঙ্গে সঙ্গে এসে হাজির হয় । আমার কিন্তু দোস্ত অনেক ভয় করছে । ভয়ের কিছু নাই । আমরা যতোক্ষন নিখির কথা মতো চলমু ততোক্ষন মনে হয় না কেউ আমাদের কোন ক্ষতি করার সাহস পাবে । আমি রন্জুর কথার সমর্থনে মাথা নাড়ারাল । এখন চল তারাতারি গোসল করেনিখির কাছে যাই । দেরি করলে ও আবার সন্দেহ করতে পারে । রন্জু সাট প্যান্টখুলে একটা ঘটি হাতে তুলে নিয়ে শরীরে পানি ঢালতে লাগলো । তোর কি মনে হয় এটা আমাদেরই নিখিলেস ? সাট খুলতে খুলতে তোজা আমাদের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে । বিন্দু মাত্র সন্দেহ নাই,এটাই আমাদের নিখিলেস । তোদের মনে আছে নিখির বাম হাতে একটা কাটা দাগ ছিলো? আমি মাথা নাড়লাম ছিলো । ছিল । আমি ঐ দাগটা আজও ওর হাতে দেখেছি । রন্জু বিজ্ঞের মতো বললো । নে এখন তারাতারি গোসল কর । বলে রন্জু মাথায় পানি ঢাললো । গোসল করে আমরা রুমে এসে জামা কাপড় পাল্টালাম । হেমন্ত এসে আমাদের ড্রাইনিং রুমে নিয়ে গেল ।বিশাল একটা রুম । মাথার উপড় ঝাড় বাতি জ্বলছে । মার্বেল পাথরের টেবিলের চর্তুর দিকে চেয়ার সাজানো । টেবিলের এক মাথায় টেবিলের এক মাথায় বসে আছে নিখিলেস । টেবিলের উপড় নানান রকমের খানা খাদ্য । হঠাৎ খাবারের গন্ধ নাকে এসে লাগাতে পেট চো চো করে উঠলো । এদিকটায় বোস । নিখিলেস দু’হাত তুলে ওর দুপাশের চেয়ারগুলো আমাদের দেখিয়েদিলো । আমি আর তোজা একপাশে অন্যটাতে রন্জু বসলো । নিখিলেস বললো নে শুরু কর । আমরা খেতে শুরুকরলাম । কোন খাবারেই তেমনটেষ্ট বুঝতে পারলাম না । মুখে দেবার পর মনে হলো আজব কিছু চিবিয়ে চিবিয়ে গিলছি । আমাদের খাবার পরিবেশন করা জন্য জনা দুইলোক দাঁড়িয়ে আছে । সবাই নিখিলেসের সামনে নিচের দিকে চেয়ে আছে । হেমন্তু এসে নিখিলেসের কানে কানে ফিস ফিস করে কিছু বললো । সঙ্গে সঙ্গে নিখিলেস উঠে দাঁড়িয়ে বললো-তোরা খা আমি আসছি।তারপর দাঁড়িয়ে থাকা লোকগুলোর দিকে তাকিয়ে বললো -খেয়াল রেখিস বাবুদের কিছু লাগবে কিনা । জি বাব । প্রায় এক সঙ্গে সবাই বলে উঠলো । নিখিলেস হেমন্ত কে নিয়ে বেড় হয়ে গেল । আমরা কোন কথা বললামনা । চুপচাপ খেয়ে দেয়ে মেয়ে গুলোর পিছু পিছু বারান্দা দিয়ে আগের সেই রুমটাতে এসে বসলাম । চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম ঘরটা গোছগাছ করা হয়েছে । বিছানায় নতুন চাদর লেগেছে । জানালার পাশে দুটো সিঙ্গেল সোফা দেখতে পাচ্ছি । আমি জানালার কাছে হাতল ওয়ালা চেয়ারটাতে বসেছি । রন্জু আর তোজা বিছানায় । রন্জু জানালাটার দিকে তাকিয়ে বললো এটা কি খোলা যায় না?
(৫) অনেকক্ষন যাবৎ সবাই চুপচাপ শুয়ে আছি । কেউ কথা বলছি না । কথা বলতে ভালও লাগছে না । মনে মনে সবাই একই চিন্তা করছি কখনভোর হবে আর এখান থেকে পালাবো । আমি ঘড়ি দেখলাম ত টা দুই মিনিট । কেমন একটা দুপ দুপ শব্দ ভেসে আসছে জানালার ওপাশ থেকে ।মনে হচ্ছে কেউ ঘাসের উপড় জোরে জোরে পা ফেলে হাঁটছে। রন্জু আমাগকে বললো দেখবি নাকি কে হাটছে ? আমি কিছু বলার আগেই ও আস্তে করে বিছানা থেকে নেমে জানালার কাছে গিয়ে কোন শব্দ না করে জানালাটাএকটু ফাঁক করে বাহিরে তাকিয়ে থাকলো । আমি শুয়ে শুয়ে দেখছি ও কিকরে । রন্জু জানালা থেকে চোখ না সড়িয়েই একটা হাত পেছনে দিয়ে আমায় ডাকতে লাগলো । আমি উঠে এসে ওর পেছনে দাঁয়ে বললাম কি ? রন্জু ফিসফিস করে বলল ,চুপ কোন কথা বলবি না , দেখ ; বলে আমাকে দেখার সুযোগ করে দেবার জন্য একটু সড়ে দাঁড়াল । আমি জানালার ফাঁকটুকু দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে চমকে উঠলাম - সন্ধ্যায় নিখিলেস যে লোকটার মাথা কেটে ফেলেছিল সে লোকটা বাহিরে হাঁটছে । এক হাতে একটা লাঠি অন্য হাত দিয়ে নিজের কাটা মাথাটা ধরে আছে । আমি ভয়ে ছিটকে পেছনে চলে এলাম , কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলাম ; রন্জু বললো কোন শব্দ করিসনা । ভয়ে আমার শরীর অবস হয়ে যাচ্ছে , হাত পা গুলো মনে হলো কাঁপছে । আমি চেয়ারে বসে পরলাম । নিজেরচোখকে বিশ্বাস করতে পারলাম না । মরা মানুষ আবার হাঁটে কি ভাবে ? এদিকে আয় এদিকে আয় রন্জু আবার আমাকে ডাকলো । আমি এগিয়ে গিয়ে বাহির তাকালাম - দেখি মাথা কাটালোকটা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে । অন্ধকার থেকে বেড় হয়ে এলো নিখিলেশ । পা পযর্ন্তু কেমন কালো একটা আলখাল্লা পরে আছে । ও এসেসোজা দাঁড়ালো মাথা কাটা লোকটার সামনে ।নিখিলেশের সামনে লোকটা হাঁটু ঘেরে বসে পরলো । নিখিলেশ লোকটার কাটা মাথাটা হাতে তুলে নিয়ে লোকটার কাটা ঘারের উপড় রাখলো তারপর কাটা গলাটার উপর হাত বুলিয়ে দিতেই কাটা মাথাটা শরীরের সঙ্গে লেগে গেল । আমরা আবার ও বিস্ময়ে বিমুঢ় হয়ে গেলাম । বিস্ময়ের গোর কাটতে না কাটতেই দেখলাম - মাথাটা জোড়া লাগতেই লোকটা এলো মেলো এদিক ও দিক পা ফেলে আবার এসে দাঁড়ালো নিখিলেসের সামনে , নিখিলেস ওর বাম হাতটা লোকটার কাধে রাখতেই লোকটা মাটিতে বসে পরলো । পুকুর পাড় থেকে নেকরে গুলো এসে লাইন দিয়ে লোকটার পেছনে বসেছে । নিখিলেস একবার চাদের দিকে তাকিয়ে আমাদের জানালার দিকে তাকালো । ভয়ে আমি আর রন্জু চট করে সড়ে গেলাম । দু’জনই কাঁপছি । বুকটা হাপারের মতো লাফাচ্ছে । আমার হঠাৎমনে হলো আমি মরে যাবো । কিন্তু বাহিরে কি হচ্ছে তা দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না । রন্জু এগিয়ে যেতেই আমিও ও’র পেছন পেছনএগিয়ে গেলাম । বাহিরে তাকিয়ে দেখি নিখিলেস ওর আলখাল্লার পকেট থেকে চকচকে একটা ছুরি বেড় করে নীজের হাতে একটা পোচ দিলো-সঙ্গে টপটপ করে রক্ত বেড়হয়ে এলো । নিখিলেস কাটা মাথা ওয়ালার মুখের উপড় ওরহাতটা ধরেতেই লোকটা মুখ হা করলো .টপটপ করে লোকটারমুখের ভেতর নিখিলেসের হাত থেকে রক্ত পরতে লাগলো। সঙ্গে সঙ্গে নেকড়েগুলো আ------উ---উ--------করে ডেকে উঠলো । লোকটা পিছিয়েগিয়ে নেকড়ে গুলোর সঙ্গে চাঁদের দিকে মুখ করে গলা মেলাল । আমি স্পষ্ট দেখলাম নিখিলেশের রক্তে লোকটার মুখ আর বুক কালো হয়ে আছে । নিখিলেশ ও চাঁদের দিকে মুখ করে আ------উ---উ--------করে ডেকে উঠলো । আমরা আশ্চর্যহয়ে দেখলাম নিখিলেশ ডেকে উঠতেই নেকড়েগুলো ডাক বন্ধ করে দিয়ে - জঙ্গলের ভেতর ছুটে পালাল । নিখিলেশ ডাকতেই থাকলো । হঠাৎ খেয়াল করলাম কাটা মাথা ওয়ালা লোকটা আস্তে আস্তে নেকড়েতে পরিনত হয়ে যাচ্ছে । পুরোপুরি নেকড়েতে পরিনত হতেই নেকড়েটা আমাদের দিকে তাকাল । ভয়ে আমাদের কল্জেশুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে । বুঝতে পারছিনা স্বপ্ন না বাস্তব্যে দেখছি ।নেকড়েটা জানালা দিকে তাকিয়ে তাকালো নিখিলেসেরদিকে । নিখিলেসও তাকালো জানালার দিকে আমার কাছে মনে হলো ওরা বুঝতে পেরেছেআমরা ওদেরকে দেখছি । আমি রন্জুকে ধরে পেছনে টেন আনলাম । ফিসফিস করে বললাম-বাচঁতে হলে আমাদের পালাতে হবে । অবশ্যই পালাতে হবে । হাঠাৎ জানালায় খরররর খরররর শব্দ হতে লাগলো । মনে হলোনেকড়েটা নোখ দিয়ে আচড় কাটছে । রন্জু আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো কি করমু ? আমি বললাম চুপ করেথাক । হঠাৎ বারান্দা থেকেপায়ে হাটার শব্দ ভেসে এলো। মনে হলো কে যেনো হেটে আমাদের দরজার দিকেই আসছে । রন্জু একলাফে খাট থেকে নেমে গিয়ে জানালার কাছে থাকা একটা সিঙ্গেল সোফা টানতে লাগলো । আমিও নেমে দিয়ে হাত লাগালাম । দু’জনমিলে যেই না দরজায় সোফাটাচাপা দিয়েছি ওমনি দরজায় শব্দ হলো । সেই জানালার খরররর খরররর শব্দ । হঠাৎ তোজা শোয়া থেকে উঠে বসে বললো পানি খাবো । আমাকে পানি দে । আমি টেবিল থেকে গ্লাসে ঢেলে ওক পানি দিলাম । পানি খাওয়া শেষ করে ও বললো- কি হয়েছি ? রন্জু বললো কে যেন ঘরে ঢুকতে চাচ্ছে । কে ঘরে ঢুকতে চাচ্ছে ? তোজা পাল্টা প্রশ্ন করলো । জানি না । আমি ফিসফিস করেবললাম ।
হয়েছে শুয়ে পর বলে তোজা শুয়ে পরলো । আমি আর রন্জুবাকি রাত টুকু বসে কাটালাম । দরজায় দুম ধাম শব্দে ঘুম ভাংলো আমাদের । মনে হচ্ছেদরজাটে কেউ ভেঙ্গে ফেলবে । জানালার ফাক ফোকর দিয়ে ঘরে আলো আসছে । আমরা বুঝতে পারলাম বেশ বেলা হয়ে গেছে । রন্জু উঠে জানালাটা খুলে দিল । আলোতে পুরো ঘরটা যেন নেচেউঠলো । দরজায় আবার শব্দ হতেই রন্জু জিজ্ঞেস করলো কে ? বাবু আমি । অনেক বেলা হয়েছে । উঠবেন না । আমি হাত ঘড়ি দেখে চমকে উঠলাম ২ টা বাজে । রন্জু আর আমি মিলে দরজা�আমি হাত ঘড়ি দেখে চমকে উঠলাম ২ টা বাজে । রন্জু আর আমি মিলে দরজার সামনে থেকে সোফাটা সড়িয়ে দরজাটা খুলে দিলাম । আমাদের বয়সিই একজন দাড়িয়ে আছে । আমাদের দরজাখুলতে দেখে বললো - বাবুরানমস্কার । আমি বললাম - তুমি কে ? জি ; আমার নাম নগেন । আমি এ বাড়িতে কর্ম করি । কাল কি তোমাকে দেখেছি ? না বাবু আমি রাতে এখানে থাকি না । সন্ধ্যায় চলে যাই বাবু ! কেন চলে যাও ? ভুতের ভয়ে? রন্জু সরাসরি জিজ্ঞেস করলো । নগেন কিছু বলেনা , চুপকরেথাকে । কি হলো কথা বলছো না কেন ? রন্জু চিৎকার করে উঠে । বাবুরা খাতে আসে , খাবার দেয়া হয়েছে । বলে নগেন আরদাড়ায় না চুটে চলে যায় । রন্জু আমাদের দিকে তাকিয়ে বলে তারাতারি রেডি হয়েনে চলে যেতে হবে । হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়েআমরা জামা কাপড় পরে নেই ।নগেন এসে আবার দরজায় দাঁড়ায় বাবুরা খেতে আসেন । রন্জু বলে নগেন ভেতরে আসো। নগেন নড়ে না । দরজায়ই দাঁড়িয়ে থাকে । আমি জানি তুমি ওদের মতো না , নগেন তুমি আমাদের হেল্প করো । আমরা এখান থেকে চলে যেতে চাই । বাবুরা খেতে আসেন । নগেন মাথা নীচু করে বলে । তুমি আমাদের হেল্প করবে কিনা বলো ? রন্জু দরজার দিকে এগিয়ে যেতেই নগেন চেলে যায় । তোরা ব্যাগ গুছিয়ে রাখ আমি আসছি বলে রন্জু ও নগেন এর পেছন পেছন যেতে চায় -আমি ওর হাত চেপে ধরে বলি -একা যাবার দরকার নেই । যা করবার একসাথেই করবো । নগেন কে হাত করতে হবে । আমার মনে হয় না কারো হেল্প ছাড়া একান থেকে বেড়হতে পারবো । তুই ঠিক বলেছিস । চল এখন খেতে যাই । তোজা এগিয়ে এসে বললো ।তাই চল । আমরা আবার ড্রাইনিং রুমে চলে এলাম ।টেবিলে নানান রকমের খাবার সাজানো আছে । টেষ্টগতরাতের মতো না । স্বার্দবোঝা যাচ্ছে । টেবিলের পাশে শুধু নগেন দাঁড়িয়ে আছে । আমরা আর ওকে আমাদের সাহায্য করার ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করলাম না । রন্জু খেতে খেতে বললো -খাবারটা ফাস্ট ক্লাস হয়েছে । নগেন রান্না করেছে কে ? জি আমি বাবু । নগেন মুখ নীচু করে বলে । তুমি বখশিস পাবে । দাঁড়াওখেয়ে নেই । খাওয়া দাওয়া শেষ করে রন্জু সত্যি সত্যি নগেন এর সামনে একটা ১০০ টাকার নোট মেলে ধললো । নাও,তোমার বখশিস , বাবু লাগবে না । লাকবে না কেনো ? নাও বলছি । লাগবে না বাবু । ভয় নেই কেউ কিছু বলবে না । তুমি নাও । আচ্ছা বলো নিখিলেস কোথায়? বাবু বাহিরে গেছেন । রাতেফিরবেন । আর আর ওর বউ কোথায় ? তিনিও বাবুর সঙ্গে গেছেন । দেখো নগেন আমার কাছে মিথ্যা বলে কোন লাভ নেই ।গতরাতে আমরা সব যেনে গেছি। আমি জানি ওরা সব পিশাচ দিনের বেলায় কোথাও লুকিয়ে থাকে রাতে বেলায়ই শুধু বেড় হয় । আমি কিছু জানিনা বাবু । বলে নগেন চলে যেতে উদ্দত হয় । রন্জু খপ করে ওর হাত চেপে ধরে বলে -ঠিক আছে রাতে যখন নিখিলেশ আসবে আমরা তখন ওকে বলবো তুমি আমাদের বলেছো ও’নাকি পিশাচ । বাবু আমাকে মারবেন না । আপনাদের পায়ে পরি ,বলে নগেন সত্যি সত্যি রন্জুর পা জড়িয়ে ধরলো । আমার কথা শুনলে তোক কথাও আমি শুনবো । রন্জু পা ছাড়াতে ছাড়াতে বললো । উঠ ঠান্ডা মাথায় আমার কথা শোন ,তারপর সিদ্ধান্ত নে কি করবি ।নগেন চোখ মুছতে মুছতে উঠেদাড়াঁলো । বলেন বাবু কি করতে হবে । তুই এখানে কি ভাবে এলি । এখানে তো কারো কাজ করার কথা নয় । আমার যতোদূর মনেহয় এখানে কেউ দিনের বেলাতেও আসার কথা না । তুই কিবাবে এলি ? বাবু আমি শুধু দিনের বেলায় আসি । ভুতের বাড়ি বলে নোক জন এদিকটাতে আসে না , আমি বাবু সপ্তাহে দু’দিন সকালে এসে ঝাড়পোছ করে বিকেল বিকেল চলে যাই । মাসে হাজার তিনেক টাকা পাই বাবু । হেমন্ত বাবু আমাকে নিয়োগ দিয়েছে । অভাবের সংসার বাবু না করতে পারিনি । নিখিলেস কবে মারা গেছে ? রন্জু আন্ধাজের উপর ঢিল মারে ? সে বাবু আমি জানিনা । হুম ; তুই থাকিস কোথায় ? বাবু বাজারের কাছে । আসিস কোন পথ দিয়ে ? বাবু বাড়ীর পেছনে একটা সংক্ষিপ পথ আছে । চল আমাদের দেখিয়ে দিবি । বাবু তেনারা আমাকে মেরে ফেলবেন । নগেন কান্না করেউঠে । আমার মায়া লাগে । আহারে অভাবে পরে মানুষ কিনা করে । তোর কোন চিন্তু নেই । তুইশুধু এখন শুধু আমাদের পথটা দেখিয়ে দে । তুই চলেযাবার পরে আমরা চলে যাবো । কেউ বুঝতে পারবে না তুইআমাদের পালাতে সাহার্য্যকরেছিস । বাবু তেনারা আমাকে মেরে ফেলবেক্ষন । না দেখালেও মেরে ফেলবে । আমি সিনেমার বিলেনদের মতো হেসে বললাম । নগেন এর পেছন পেছন গিয়ে আমরা সংক্ষিপ্ত পথটা দেখে এলাম । বাড়ির পেছনেরপ্রাচিরের দেয়াল মাঝ খান দিয়ে ছোট্র একটা পায়ে হাটার রাস্তা চলে গেছ দূরে একটা গ্রামের দিকে ।ফিরে এসে যটপট ব্যাগগুলো কাধে নিয়ে যেই না ঘর থেকেবেড় হতেছি , অমনি শুরু হলো প্রচন্ড বেগে বাতাস ।মনে হলো ; আমাদের উড়িয়ে নিয়ে যাবে । আমরা ঘরে ফিরে দরজা বন্ধ করে দিলাম। তোজা বললো -নিখিলেস আমাদের বাধা দিচ্ছে নাতো?
না । ভুলে যাসনে এটা বৈশাখ মাস । মনে হয় কালবৈশাখি ঝড় শুরু হয়েছে । রন্জু জানালাটা একটু ফাঁক করে বাহিরে তাকাল । আমিও দাড়ালাম ওর পাশে । বাহিরে তাকিয়ে দেখি প্রচন্ড বাতাসে পুকুরের পাশের নারিকেল গাছ গুলো যেন একেবারে ভেংগে পড়তে চাইছে । ঘরের ভিতর হুর হুর করে বাতাস ডুকছে । পরপর প্রচন্ডে শব্দ করে দুটো বাজ পরলো । পুরো বাড়িসহ আমরা কেঁপে উঠলাম । আমি জোরে জোরে পড়তে লাকলাম -লাইলাহা ইন্তা আন্তা.....................জোয়ালমিন । (৬) যখন ঝড় থামলো তখন অনেক রাত হয়ে গেছে । হেমন্ত এসে দরজায় কড়া নাড়লো । আমরা দু’টো লোহার রড যোগার করে দরজার পেছনে লুকিয়ে রেখেছি । এছাড়া আমাদের কাছে আত্মরক্ষার জন আর কিছু নেই । অনেকক্ষন দরজা নোক কড়ার পর রন্জু দরজা খুলে দিল ।দরজা খুলার আগে ও আমাদের বললো খবরদার ওরা যেন বুঝতে না পারে আমরা সব যেনে গেছি । হেমন্ত ভেতরেডুকে বললো -নমস্কার বাবুরা । সারাদিন ছিলেন কোথায় হেমন্ত বাবু । রন্জু হেমন্তকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বলে উঠলো । -বাবুর সঙ্গে গিয়েছিলাম বাবু । আপনাদের কোন অসুবিধা হয়নিতো । না , সুবিধা ও খুব একটা হয়নি । খালি বাড়িতে কারইবা ভাল লাগে বলুন ? আমি দু:খিত বাবু । লোকজন কম হওয়ায় এমনটা হয়েছে । তা নিখিলেসের বউ কে ও তো কোথাও পেলাম না । কোথা থেকে এক লোক এসে খাবার দিয়ে কোথায় যেন হাওয়া হয়েগেল । তারপর শুরু হলো এই বিচ্ছিরি ঝড় । ঠাকুরান ও গিয়েছিলেন আমাদের সঙ্গে । হেমন্ত রন্জুর সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছে । তা কৈই নিখিলেস ? ওকে ডাকেন কথা বলি । কর্তা নেডি হয়ে তবেই আসবে। আপনাদের কিছু লাগলে বলেন আমি লোক বলে দিচ্ছি । না কিছু লাগবে না । ঠিক আছে বাবু আমি তা হলে আসি । বলে হেমন্ত চলে গেল। রন্জু দরজা বন্ধ করে দিয়ে এসে বললো -মনে হয় কিছু বুঝতে পারেনি । এখন কি করবি ? তোজা জিজ্ঞেস করলো । শোন রাতে কোন অবস্থাতেই পালাতে পারবো না । কোন মতে আজকের রাতটাও এখানে পাড় করে দিতে হবে । সকাল পর্যন্ত যদি বেঁচে থাকি তখন দেখা যাবে । বলে রন্জু খাটে পা ঝুলিয়ে বসেপরলো ।অনেক রাত করে নিখিলেস এলো। সাদা ধূতি আর পান্জাবি পরে আছে । সারাদিন না থাকার জন্য অনেক দু:খ প্রকাশ করলো । আরো বললো কয়েকটা দিন তোদের বউ দিদিকে নিয়ে যেতে হবে । তোরা আরামে থাক । কোন সমস্যা হবে না । তোজা চলে যাবার কথা বলতেই নিখিলেসের চোখ দু’টো লাল হয়ে উঠলো -বললো কেন ? কেন যাবি ? এখানে কি অসুবিধা হচ্ছে তোদের ?রন্জু বললো কোন অসুবিধাই হচ্ছে না । বরং শহরের যান্ত্রিক জীবন থেকে অনেক আরামে আছি । তুই আমাদের নিয়ে চিন্তা করিস না । রন্জুর কথায় নিখিলেসের মুখে হাসি ফিরে এলো - সাদা চকচকে দাঁতগুলো বেড় করে ও বললো এই না হলে বন্ধু । আমাদেরকথার মাঝখানে যথারিতি নিখিলেসের বউ শরবত নিয়ে এলো । আমরা শুধু সৌজন্য রক্ষার জন্য আমি আর রন্জুগ্লাস গুলো নিয়ে মুখে দিলাম । তোজার দিকে তাকিয়ে দেখি ওর পুরো গ্লাস সাবার করে দিয়েছে ।হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুখমুছে ও বললো - বউদি দারুন শরবত বানিয়েছেন , একেবারেশরবতে এপি । নিখিলেসের বউরন্জুর দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলো । তোজার উপড় আমার কেমন ঘা জ্বালা করে উঠলো । নিখিলেসরা চলে যাবার সাথে সাথে আমি তোজার মাথায় চাটি মেরে বললাম তুই এভাবে শরবত খেলি কেনো ? তোজা শুতে শুতে বললো -বারে , খাবার জিনিষ খাবো না ? ওতে যদি কিছু মেশানো থাকে? এমনিতেই ক্যামন রক্তের মতো মনে হয় । দেখলেই শরীরগিনগিন করে উঠে । আমি ঘরের ভেতরই থুতু ফেললাম । কৈই আমার তো ভালই লাগলো ।তোজা শুয়ে পরলো । রন্জু চুপচাপ কি যেন ভাবছে আমি ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে কোন জবাব না পেয়ে কাধধরে নাড়ালাম -কি রে , কি ভাবছিস ? হুম !কি ভাবছিস ? আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম । ভাবছি আমাদের নিয়ে নিখি’রপ্লানটা কি ? যদি মেরে ফেলে চাইতো তবে সহজেই মেরে ফেলতে পারে । কিন্তুতা না করে আমাদের যখন বাঁচিয়ে রেখেছে তখন বুঝতে হবে আমাদের নিয়ে নিশ্চই ওর কোন প্লান আছে । আমার ও তাই মনে হয় ; নিশ্চই কোন না কোন প্লান আছে । কি আর প্লান হয়তো আমাদেরওভুত বানিয়ে ফেলবে । তারপরএকসাথে সারা জীবন এখানে কাটিয়ে দেবো ,বলে তোজা খেক খেক করে হাসতে লাগলো । তোর খুব সাহস হয়েছে বলে মনে হচ্ছে -আমি তোজার দিকে তাকিয়ে বললাম ; নিখির বউটা দেখেছিস দোস !যোস না ? এই শালার কাছে কেউ মানুষ,ভুত - প্রেত নিরাপদ না । বলে রন্জু তোজাকে একটা ঘুষি মারলো । কেন তোমার মোনালিসার দিকে তো তাকাই নাই ; তয় তোমার জ্বলে কেন ? শালা ওর দিকে তাকিয়ে দেখ না একবার , আমি না মোনাই তোকে জুতা মারবে । আব্বে যা । দূরে গিয়া মর ;গন্ধ লাগে । বলে তোজা সড়েগেল । হঠাৎ ওদের দু’জনের এই খুনসুটি আমার কাছে অনেক ভাল লাগল । রন্জু তোজার উপরে উঠে ওকেছোট ছোট ঘুসা মারছে । তোজা হাসতে হাসতে বলছে -ঠিক আছে ; ঠিক আছে দোস্ত তোকে মরতে হবে না নিখিলেসমরুক আর ও’র বউকে নিয়ে আমি ফুতি করি । তোজা হাসতে লাগলো ।
হঠাৎ বারান্দা থেকে ঝুম ঝুম শব্দ ভেসে এলো । আমি ওদের দিকে তাকিয়ে বললাম -চুপ ! শুন বারান্দায় কে যেন হাঁটছে ; আসলেই বারান্দা থেকে নুপুরের শব্দ ঝুম ঝুম ভেসে এলো । মনে হলো কে যেন অতি সঙ্গেপনে পা ফেলেফেলে এদিকটাতেই এগিয়ে আসছে । আমরা তিন জন মুখ চাওয়া চায়ি করলাম । রন্জুলাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে সোফাটা দরজায় দিয়ে দিল । তারপর দরজায় কান লাগিয়ে দাঁড়িয়ে রইল । আমিআর তোজা গিয়ে ওর পাশে দাড়াঁলাম । নুপুরের ঝুম ঝুম শব্দটা দরজায় কাছে এসে কিছু সময় থেমে আবার বারান্দার অন্য পাশে চলে গেল । আমার হঠাৎ ভয় লেগে গেলো । রন্জুর দিকে তাকিয়ে দেখি ও হাতে একটা রড তুলে নিয়েছে । আমি কিছু বলতে গেলে ও হাত ঠোটের কাছে নিয়ে কথা বলতেনিষেধ করে হাত দিয়ে পেছনেসড়ে যেতে বললো । আমি ফিস ফিস করে জিজ্ঞেস করলাম কিকরবি ? তোজার হাতে রডটা দিয়ে রন্জু দরজা থেকে আস্তে সোফাটা সড়িয়ে ফেললো । ভয়ে আমার কলিজা শুকিয়ে আসছে । আমি ওর উদ্দেশ্য বুঝতে পেরেছি । একহাত দিয়ে তোজার ঘাড় খামছে ধরে আছি । সোফা সড়িয়ে রন্জু চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো । এদিকে নুপুরের শব্দটা বারান্দার অন্য প্রান্ত থেকে আবার আমাদের দিকে আসতে লাগলো । আমার সারা শরীর হিম হয়ে আসছে । বুক ধকধক করছে । দোয়া দুরুত পড়তে গিয়ে এলো মেলো করে ফেলছি । রন্জু দেয়াল থেকেমশালটা নামিয়ে এক হাতে নিয়ে দরজার কাছে এসে দাঁড়াল , তারপর নুপুরের শব্দটা দরজা বরাবর আসতেই -একটানে খুলে ফেললো দরজা । কয়েক মুর্হুতের জন্য মনে হলো কে যেন চট করে বাতাসে মিশে গেল । আমরা বারান্দায় নেমে এক প্রান্তু থেকে অন্য প্রান্তু পর্যন্তু তাকালাম । অন্ধকারে কাউকে দেখতে পেলাম না । রন্জু বললো চল -সামনে গিয়ে দেখি ; আমি ওর হাত টেনে ধরে বললাম - কোন দরকার নেই । ভেতরে আয় । ঘরে ডুকে দরজা বন্ধ করে সোফাটা দরজার সামনে দিয়ে দিলাম ।বিছানায় বসে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম বলতে পরবো না ; হঠাৎ ঝাকুনিতে ঘুম ভাংলো - চোখখুলে তাকাতেই রন্জু বললো,তোজা কৈই ? তোজা কৈই । আমি চট করে বিছানার দিকে তাকালাম যেখানে তোজা শুয়ে ছিল । দেখি বিছানা শুন্য । তোজা নেই । এদিকটায় তাকাতেই দেখি দরজা জানালা হাঁট করে খোলা । জানালা দিয়ে হু হুকরে বাতাস আসছে । বাতাসে দেয়ালে মশালটা নিভু নিভু করছে । রন্জ ঝট করে বিছানা থেকে নেমে । লোহাররডটা হাতে নিলো । আমি ওর গা ঘেষে দাঁড়ালাম , মশালটা নিয়ে আয় বলে রন্জুছুটে গেল বারান্দার দিকে । বারান্দায় গিয়ে দেখি তোজা বারান্দার শেষ মাথা দিয়ে সিঁড়িতে নেমে যাচ্ছে । রন্জু ডাক দিলো তোজাম্মেল । তোজা ফিরেও তাকালো না । আমরা বুঝলাম ও ঘোরের মধ্যে হাঁটছে । আমি আর রন্জু ছুটতে লাগলাম আমরা যখন বারান্দার শেষ মাথায় পৌছালাম তোজা তখন আমদের জানালার সামনের খোলা জায়গাটাতে চলে গেছে । ওর সামনে সামনে ওর দিকে একটাহাত বাড়িয়ে পেছন ফিরে হাটছে নিখিলেসের বউ । আমরা ওকে ডাকতে ডাকতে পেছন পেছন ছুটলাম । আমাদের দেখে নিখিলেসের বউ মুখ বিকৃত করে গরররর করে উঠলো । নিখিলেসের বউ পাতলা একটা গাউন পরে আছে । বাতাসে গাউনটা পতপত করেকাঁপছে । মুখের দু’পাশ দিয়ে লালা গড়িয়ে পরছে । মনে হলো আমাদের ছিড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলবে । পরের সংখ্যায় সমাপ্যঃ-
একটি সত্য ভৌতিক কাহিনী
লেখক||মোঃ হাবিব জেলাঃ রাজশাহি থানাঃগোদাগারি
[ঘটনাটি আমার চাচাতো ভাই এর স্ত্রীর । ঘটনাটি ফুরতিরতে শুনানো হবে এই আশাতে পাঠালাম ।] শুরুতেই একটা কথা বলে রাখি যে আমদের গ্রামে যারা প্রবীণ ব্যক্তি আছে তারা বলেন যে আমাদের গ্রামে নাকি মানুষের চেয়ে জিনের সংখ্যা বেশি । ঘটনাটা প্রাই ৭-৮ বছর আগের ।আমার চাচাতো ভাই নাম কাজল তার বাবা তাকে অনেক বড় অনুষ্ঠান করে তার খালাতো বনের সাথে বিয়ে দেয় যদিও চাচার অবস্থা ভালো ছিল না , এক থেকে দের বছরের মধ্যে সে একটি কন্য সন্তানের মা হয় । আমাদের গ্রামে ৫ টি ছোট বড় পুকুর আছে , তখুন ছিল খরার সময় প্রায় ৩ টি পুকুরের পানি গোসলের উপযুক্ত ছিল না ।তাদের বাড়ির পাশে পুকুরটিতেও পানি ছিল না তাই তারা (চাচাত ভাই+ভাবি)তাদের বাড়ি থেকে যে পুকুরটি সবচেয়ে নিকটে এবং গোসলের উপযুক্ত তারা সিদ্ধান্ত নেই সেখানে ঘাট(পুকুরে গোসল করার জন্যে কাঠ,গাছের গুরি দিয়ে তৈরি) তৈরির করার । কথা অনুযায়ি কাজ, বাড়ির পুরুষেরা (আমার চাচাত ভাই আর চাচা) ঘাট তৈরি করার জন্যে পুকুরে যায় এবং ঘাট তৈরি করে । ঘটনার পরে শুনলাম যেপারার এক দাদি নাকি ঐ সময় তাদেরকে ঘাট তৈরি করতে দেখে তাদের কাছে গিয়ে তাদেরকে ঘাটটি করতে নিষেদ করে , দাদি বলেছিল যে এখানে নাকি জিনেরা গোসল করে কিন্তু তারা কথাটি উপেক্ষা করে ঘাটটি বানায় । ঘাটটি বানানোর পর থেকে প্রতিদিন আমার ভাবিকে স্বপনে দেখাতো যে তারা যেন ঘাটটি না ব্যবহার করে কিন্তু আমার ভাবি কথাটি ভাইকে বললে আমার ভাই সেটি গুরুত্তের সাথে নেই না । ভাবি রাতে রাতে মাঝে মাঝে তাদের বাড়ির পাশে ছোট ছেলের কান্না কিংবা হাসির শব্দ শুনতে পেত । তাদের বাড়ির পাশে একটি পুরনো বাড়ি ছিল,পুরনো বলতে ভাবিদের বাড়ির পাশে থাকতো এক প্রতিবেশী দাদা তারা প্রায় ১০ বছর আগে জাইগাটি বিক্রি করে চলে যায় , তারপর বাড়িটি ভেজ্ঞে মাটিতে কেবল উচু হয়ে আছে । ভাবি আর একদিন কান্নার শব্দ শুনে তাদের ঘরের জানালা খুলে দেখে যে আশলে কে কাদচ্ছে কিন্তু সে খুলে চমকে গেল দেখল যে ছোট ছোট কয়েকটা বাচ্চা কাদচ্ছে আর সেগুলোর উচ্চতা মানুষের এক হাত , ভাবি দেখেই ভয়ে জানালা বন্দ করে দিলো ।পরদিন সকাল ৯ টার দিকে ভাবি গোসল করতে গেল সেই ঘাঁটে গোসল শেষে যখুন বাড়িতে ফিরবে তখুন সে দেখল যে একটা বড় মরা মাছ পানিতে ভাসছে সে মাছটিকে পানি থেকে তুলে বাড়িতে নিয়ে আশে এবং রান্না করে খেয়ে ফেলে আর হ্যাঁ মাছটা শুধু ভাবিই খেয়ে ছিল ভাই খেয়ে ছিল না আর অন্য সকলে খেয়ে ছিল না কারন আমার ভাই এবং ভাবি তারা আলাদা করোকতো । খাওয়ার পর থেকে ভাবি কেমন যেন ঝিম ধরে যায় কয়েক দিন পর বিষয়টি খেয়াল করা হয় যখুন ভাবি তার মেয়েকে তার বুকের দুধ থেকে বিরত রাখে শুধু ভাবিই বুকের দুধ থেকে বিরত রেখেছিলো তাই নয় ভাবির মেয়েকেও খাওয়াতেগেলে সেও খাচ্ছিল না অথচ খিদের জালাই কাদচ্ছিল । তখুন পাড়ার সেই দাদিটি যে ঘটটি করতে নিষেদ করেছিল সে এসে বিষয়টি নিশ্চিত করলো যে ভাবি আর এখুন ভাবি নাই টার শরীরে অন্য কেউ থাকে । আমি কয়েক বার দেখেছিলাম কিন্তু ভাবির আচরণ এত ভয়ানক ছিল যে আমাকে আর আমার মা সেখানে যেতে আর দেই নি । শুরু হল চিকিৎসা , অনেক কবিরাচ দেখলো ভাবিকে কিন্তু কোন কিছু হল না । কবিরাজে বলে ছিল যে তার শরীরে নাকি৭ জন জিন আছে যারা কোন কিছুর বিনিময়ে তার শরীর ছারতে প্রস্তুত না । আর একটা কথা ভাবিকে যখুন একজাইগা থেকে অন্য জাইগাই নিয়ে যাওয়া হত তখুন কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ জন মানুষ লাগতো আর তারা বলত যে টার ওজন ৫ গুন বেড়ে গেছে ।যাই হোক ৭ দিন পর করিরাজ বলল যে সে আর পারবে না আমারা যেন অন্য জাইগাই চেষ্টা করি । আষ্টম দিনে সকাল ৯ টার সময় ভাবিকে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার জন্যে ভ্যনে তোলা হল ঐ সময়আমি সেখানেই ছিলাম আর দেখছিলাম সেই ছোট শিশুটিকে যার বয়ষ ছিল মাত্র ৫০ দিন আর ভাবির সব আজব আজব আচরণকে । বেলা বারটা হতে হতে ভ্যন রাজশাহী মেডিকেলে চলে গেলো । যাওইয়ার অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে ডাক্তার এসে ভাবিকে দেখে একটা ইনজেকশনের নাম লিখে দিলো, ভাই সেটি নিয়ে এল এবং ইনজেকশনটি দেওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে ভাবি তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যগ করলো । আজ তার মেয়ের বয়স সাত বছর নাম সালমা আর সে পড়ে ক্লাস থ্রিরিতে । তার বাবা আবার বিয়ে করেছে । আরও অনেক ঘটনা আছে আমাদের এলাকাতে এবং সেগুলো অনেক ভয়াবহ আরেকটা ঘটনা সংক্ষেপে বলি, আমাদের পাড়াতে আর একটা ছোট পুকুর আছে তো পুকেরের মালিক পুকুরটি শুকানোর জন্যে আমার নিজের চাচাত ভাই কে ঠিক করে পুকুরটি শুকানোর জন্যে কারণ আমার বড় ভাই এর পানি সেচ দেওয়ার মেশিন ছিল । পুকুরটির চারপাসে অনেক বড় বড় আমের গাছ ছিল । সন্ধার সময় বড় ভাই মেশিন সেট করে পানি শুকানোর জন্যে পানি শুকানোর জন্যে সময় লাগবে প্রায় ১২ ঘণ্টা বা পুরা রাত তাই বড় ভাই মেশিন পাহারার জন্যে মেশিন থেকে একটু দূরে বিছানা তৈরি করে সেখানে থাকল ,হটাত করে বড় ভাই দেখে যে মাটিতে কালো কি যেন ঝুলছে উপরের দিকে তাকিয়ে ভাই চমকে উঠলো দেখল যে একটি মহিলা তা শিশুকে দুধ পান করাচ্ছে আর সে বসে আছে একটা আমের গাছে পা দুটো আছে অন্য দুটি গাছে আর চুল গুল মাটি প্রায় হয়ে আছে ।
অশুভ ছায়া
লেখকঃ আমান উল্লাহ্
আজকে আমি যে ঘটনাটি শেয়ার করবো সেটা ঘটেছে ১০-১২ বছর আগে। আমার আম্মু আব্বু দুজনেই সরকারি চাকুরী করেন। উনাদের চাকরীর সুবাদে আমরা অনেক জায়গায় থেকেছি, যেমন, মাধবপুর, হবিগঞ্জ, পলাশ, ছুনারঘাট, ত্রিশাল। আবারো আব্বুর বদলী হল। এবার হল কিশোরগঞ্জ। আব্বুর পৈত্রিক নিবাস। তাই আব্বু ঠিক করলেন যে এবার আর কোথাও যাবেন না। এখানেই থেকে যাবেন। তাই তিনি একটা ভালো বাড়ি দেখতে লাগলেন কেনার জন্য। কিনেও ফেললেন। আমরা উঠলাম নতুন বাড়িতে। কিন্তু বাড়িতেযারা আগেই ভাড়া থাকতো তারা যেতে রাজি হল না। বরং আবদার করল ভাড়াটিয়া হিসেবে এখানেই থেকে যেতে। আব্বু শেষমেশ রাজি হলেন। ভাড়াটিয়ারা ছিলেন হিন্দু। যাকে নিয়ে এই ঘটনা তিনি ঐ ভাড়াটিয়া পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। আমাদের থেকে বয়সে অনেক বড়। আমার বড়ভাইয়ার সমবয়সী। উনার নাম ছিল রনি। খুবই দুষ্ট প্রকৃতির ছিলনে তাই উনাকে বেশিরভাগ সময়ই বাসায় পাওয়া যেত না। সারাদিন এটা সেটা করেবেড়াতেন। একদিন তিনি গিয়েছিলেন মাছ ধরতে। মাছ ধরা শেষে তিনি যথারীতি বাসায় ফিরে এলেন। আমাদের বাসার পাশেই ছিল একটা মেহেগনি গাছ। গাছে মেহেগনি ফল ধরেছিল।তো, রনি ভাই সেই ফল পাড়ার জন্য গাছে উঠে বসলেন। গাছতা যেই দিকে ছিল ঐদিকে ছিল নরসুন্দা নদী। আমাদের বাড়ির দিকটা নদীর পার থেকে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল। রনি ভাই ফল পারছিলেন। হটাত কি যেনও হল আর রনি ভাই ঝটকা খেয়েগাছ থেকে নিচে পড়ে গেলেন। গাছ থেকে পরেই তিনি গড়িয়ে যেতে লাগলেন। আমার বড় ভাই ছিলেন পাশেই। তিনি এই কাণ্ড দেখে দৌড়ে গিয়ে তাকে ধরে ফেললেন। কিন্তু সেই হেংলা পাতলা ছেলেটিকে আমার বড় ভাই টেনে তুলতে পারছিলেন না। আমার ভাই নিয়মিত ব্যায়াম করেন, এবং উনার শরীর স্বাস্থ্য মোটামুটিভালো। তিনি রনি ভাইকে টেনে তুলতে পারছেন না এই কথাটা আমার কাছেও বিশ্বাসযোগ্য হতো না যদি না আমি সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হতাম। ভাইয়া যতই তাকে টেনে ধরার চেষ্টা করেন তিনি ততই নিচে নেমে যান। যেনও নিচ থেকে কেউ তাকে বড় কোনও শক্তি দিয়ে টানছে। আস্তে আস্তে তিনি কাঁটা তারের বেড়ার দিকে যেতে লাগলেন। রনি ভাই শুধু চেঁচাচ্ছে আর বলছে, আমাকেবাঁচাও, আমাকে নিয়ে গেলো! এরপর অনেক কষ্টে উনাকে উপরে টেনে তলা হয়।টেনে তোলার খানিকপর উনি জ্ঞান হারান। জ্ঞান হারানোর আগে তিনি শুধু একটা কথাই বলেন যে, আমাকেধাক্কা দিয়ে গাছ থেকে ফেলে দিলো।তখন লোকজন কবিরাজের উপর বিশ্বাস করতো। তাই এলাকার স্বনামধন্য কবিরাজকে ডেকে নিয়ে আশা হল। আধ্যাত্মিক কোনও ক্ষমতা তার ছিল কিনা জানিনা, তবে হিন্দু হলেও তিনিপবিত্র কোরআন শরীফ মুখস্ত করেছিলেন। তিনি এসে একটা সাদা রমালে কর্পূর জাতীয় কিছু নিয়ে কি যেনও করলেন। তারপর রনি ভাইয়ের মাকে বললেন, তোমার ছেলে আজ মাছমারতে গিয়েছিলো? মহিলা মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন। এরপর কবিরাজ বললেন, ছেলে ভুল করে ফেলেছে। কবরের উপর বসে মাছ মারা ঠিক হয়নি। এরপরতিনি একটা তাবিজ জাতীয় কিছু দিয়ে চলে গেলেন। রনি ভাইয়ের জ্ঞান ফিরলে পড়ে জানা যায় যে, উনি আসলেই একটা কবরের উপর বসেমাছ ধরেছিলেন। পরে যখন তিনি গাছে উঠেন তখন তার কেবলি মনে হতে থাকে তাকে কে যেনও খুব জোড়ে ঠেলছে।এবং এরপর হটাত ধাক্কা দিয়ে তাকে নিচে ফেলে দেয়। নিচে পড়ে যাওয়ার পর তিনি উঠার চেষ্টা করলেকে যেনও তার পা জড়িয়ে ধরে এবং তাকে গড়িয়ে কাঁটা তারের বেড়ার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরপর আমার ভাইয়া তাকে টেনে উপরে তুলেন।এই ঘটনার পর থেকে রনি ভাইয়ের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যায়। উনি আর কোনোদিন মাছ মারতে যাননি। এমনকি সেই গাছের আসে পাশেও যেতেন না। শোনাঘটনা হলে আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হতো। কিন্তু চোখের সামনে দেখা ঘটনা কিচোখের ভুল বলে কাটানো যায়?
ভয়ঙ্কর রাত
আরিফ আহমেদ
ঘটনাটা আমি যখন দশম শ্রেণীতে পড়ি তখনকার।। আমি ঢাকায় একটা রেসিডেণ্ট স্কুলে পরতাম তখন।। গ্রীষ্মের ছুটিতে দেশের বাড়িতে বেড়াতে গেছি।। জায়গাটা ময়মনসিংহে।। আমি যেইদিনবাসায় পৌঁছলাম তার কয়েকদিন পরের ঘটনা।। আমাদের এলাকায় হাফিয নামের একজন লোক থাকতেন।। লোকটা ছিল খুবই বদমেজাজি আর রাগী।। সবার সাথেই তারঝগড়া লেগে থাকতো।। এমনকি নিজের ভাইয়ের সাথেও জমি সংক্রান্ত ব্যাপারে অনেকদিন যাবত তার ঝগড়া লেগে ছিল।। হয়তো এতো শত্রু থাকার কারনেই কে বা কারা তাকে একরাতে বাজার থেকে আসার সময় তাকে নেরে ফেলে।। গ্রাম অঞ্ছলের খুন।। তাই পুলিশ এসে লাশটাকে পোস্ট মরটেম এর জন্য লাশ কাঁটা ঘরে পাঠাতে চাইলো।।রাস্তা ভয়াবহ খারাপ থাকায় কোনও গাড়ি পাওয়া গেলো না।। শেষমেশ এক ব্যান গাড়ি চালককে তারা রাজি করাতে পারলো লাশ নিয়ে যাবার জন্য।। ব্যান চালক ছিল জুয়ান তাগড়া মানুষ তাই ভয়ভিতি তেমন একটা ছিল না।। লাশকাটা ঘরটা মোটামুটি ভালোই দূরে আর যাওয়ার পথে রাস্তায় একটা জঙ্গলের মত জায়গা পরে।। লাশ নিয়ে পরিবারের লোকদের কান্নাকাটি, বিলাপের কারনে রউনা হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো।। অনেকেই লাশ এতো রাতে নিয়ে যেতে না করলেও ব্যান চালক পাত্তা দিল না।। নিজের সাহস দেখানোর জন্য তখনই রউনা হল সে।। বলা বাহুল্য, এতো রাতে তার সাথে যাওয়ার মত তেমনকেউ উপস্থিত ছিল না।। তাইসে একাই রউনা হয় লাশ নিয়ে।। গল্পের বাকি অংশটুকু ব্যান চালকের মুখ থেকে শোনা।। তার জবানবন্দিতে যা শুনতে পারলাম তা নিজেরভাষায় লিখতে চেষ্টা করছি।। নুরু ভাই(ব্যান চালক) রউনা হবার ৩০ মিনিটের মধ্যে অন্ধকার হয়ে গেলো।। তখন তিনি একটা হারিকেন জ্বালিয়ে সেটা ব্যান এর নিচে ঝুলিয়ে দিলেন।। যারা গ্রামে গঞ্জে গেছেন তারা হয়তো বা দেখেছেন।। যারা শহরে থাকেন তারা তো প্রায় কিছুই দেখেন নাহ।। যাক গিয়ে, মূল ঘটনায় ফিরে আসি।। সেদিন পূর্ণিমা রাত ছিল।। তাই রাস্তা একদম ফকফকে দেখা যাচ্ছিল।। তো, সেই জঙ্গলের পাশাপাশি আসা মাত্রই নাকি বাতাসে নাকি অন্য কোনও উপায়ে কে জানে, হারিকেন তা নিভে গেলো।। নুরু ভাই ব্যান থেকে নেমে আবারো হারিকেন জালানর চেষ্টা করলো।।কিন্তু জোর বাতাস বার বারম্যাচের কাঠি নিভিয়ে দিচ্ছিল।। যখন নুরু ভাই ম্যাচের কাঠি জালানর চেষ্টা করছিলেন, তখন হটাতউনার মনে হল লাশটা যেনও খানিকটা নড়ে উঠলো।। গ্রাম্য আর কুসংস্কার আক্রান্ত হলেও নুরু ভাই ছিলেন বিরাট সাহসী লোক।। তাই তিনি মনকে সান্ত্বনা দিলেন যে, ও কিছু না।। শুধুই মনের ভুল।। কিন্তু তবুও তার মনের মধ্যে একটাখটকা রয়ে গেলো।। হারিকেনটা শেষ পর্যন্ত জালাতে না পেরে হাল ছেড়েদিলেন তিনি।। ভাবলেন, চাঁদের আলোতেই কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন।। রাস্তাঘাট চাঁদের আলোতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে তাহলে আর বাড়তি আলোর দরকার কি।। ব্যান চালিয়ে কিছুদুর যাওয়ারপর হটাত উনার খটকা লাগলো।। পিছনে লাশটার নড়াচড়ার আওয়াজ পাওয়াগেলো যেনও।। মনে হলে পাশ ফিরে শুল।। নুরু ভাই পাত্তা না দিয়ে ব্যান চালাতে লাগলো।। বাইরে যতই সাহসীর ভাব দেখান, আসলে ভেতরে ভেতরে তখন ঠিকই ভয় ঢুকে গেছে।। আর কিছুদূর যাওয়ার পর তার মনে হল লাশটা যেনও উঠে বসেছে আর কষ্ট করে টেনে টেনে শ্বাস নেয়া শুরু করেছে।। তিনি সাথে সাথে পেছনে তাকিয়ে দেখলেন, এবার আর ভুল নয়।। আসলেই লাশটা উঠে বসেছে।। লাশের উপর থেকে কাপড়টা সরে গেছে।। চাঁদের আলোয় পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে মুখখানি।। চোখের জায়গাটায় বড় গর্ত।। আর মুখটা যেনও কেউ এসিড দিয়ে ঝলসে দিয়েছে।। ওটা দেখে নুরু ভাই ভয়ে কাপাকাপি শুরু করে দিল।। ব্যান থেকে নেমে যেই দৌড়দিতে যাবে অমনি দেখল লাশটা সামনের রাস্তায় পরে আছে।। আড়াআড়ি ভাবে,পথ আটকে।। এটা দেখে পিছনেতাকিয়ে সে দেখল লাশটা ব্যানে নেই।। উনি আর সহ্যকরতে পারলেন না।। ভয়ে দিক্বিদিক জ্ঞান হারিয়েদৌড় মারলেন।। কোন দিকে যাচ্ছেন তাতে তার কোনও হুশ নেই।। কেবলি মনে হতে লাগলো, পেছনে কে যেনও দৌড়ে আসছে।। সে দৌড়ের স্পীড বাড়িয়ে দিল।।এভাবে কিছুক্ষণ ছোটার পর সে দূরে কিছু আলো দেখে সেদিকে রুদ্রশাসে দৌড়াতে লাগলো।। আলোটা আসছিলো একটা বাড়ি থেকে।। নুরু ভাই দৌড়ে গিয়ে একটা বাড়ির দরজায় ধাক্কা খেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলেন।। শব্দ শুনে বাড়ির লোকজন বের হয়ে এলে নুরুকে অচেতন অবস্থায় পায়।। সেবা যত্ন করার পর নুরু ভাইয়ের জ্ঞান ফিরে।। তার মুখে ঘটনার বিস্তারিত শুনে বাড়ির জউয়ানরা মিলে বের হয় লাথি সোটা হাতে।। কিন্তু নুরু ভাইয়ের দেখানো মত জায়গায় গিয়ে কিছুই দেখতে পেলো না।। শুধু দেখা গেলো, যেই জায়গায় নুরু ভাই লাশটাকে শুয়ে থাকতে দেখেছিল, সে জায়গাটা কেমন যেনও উঁচু হয়ে আছে।। আমি নিজেও পরেজায়গাটা দেখেছিলাম।। অনেকটা স্পীদ ব্রেকারের মত।। গল্পটা এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত কিন্তু আরেকটু ঘটনা বাকি রয়ে যায়।। এরপরেরবার যখন আমি বাসায় যাই তখন শুনি যে, রাস্তারমাঝে উঁচু জায়গা থাকায় সমস্যা হচ্ছিল।। তাই রাস্তা কেটে জায়গাটা সমান করে দেয়া হয়।। কিন্তু, এর পরদিনই আবার জায়গাটা উঁচু হয়ে যায়।। আবারো গ্রামবাসী মিলে জায়গাটা কেটে সমান করে দেয়।। কিন্তু কিছুদিন পর আবার সেই আগেরমতন উঁচু।। এরপর গ্রামের সকলের উপস্থিতিতে একটা বড় গর্ত খোঁড়া হয় সেখানে।। খুঁড়ে সেখানে ঐ হাফিজ নামক বেক্তির পচাগলা লাশ পাওয়া যায়।। পরে তাকে ঠিক মতন দাফন করা হয়েছিলো আর রাস্তাটাও আর কখনো উঁচু হয়নি।।
হরর গল্প - আস্তিক
মোঃ এনামূল হাসান
6 জুলাই, 2006। রাতে ডিনার করে ইজিচেয়ারে বসে একটা বই পড়ছিলাম। এসময় বিকট শব্দে বেজে উঠল আমার পুরনো আমলের টেলিফোন সেটটা। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে শুনতে পেলাম আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবিরের কন্ঠস্বর। কাজ করে করে একেবারে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। আবিরকে বলেছিলাম কক্সবাজারের একটা টিকিট কনফার্ম করে রাখতে। একারনেই ফোন করেছে ও। পরশুদিন বিকাল 5 টায় ফ্লাইট। খুশি হয়ে উঠল মনটা। যাক কয়েকটা দিনতো অন্তত নিশ্চিন্তে বিশ্রাম নিতে পারব। 8, জুলাই। যথাসময়ে রওনা দিলাম আমি। চট্টগ্রাম পৌঁছতে সন্ধ্যা 7টা বেজেগেল। ট্যাক্সির খোঁজে এদিক ওদিক তাকাতেই একটা ট্যাক্সি এসে আমার সামনে দাঁড়ালো। ট্যাক্সির ড্রাইভারের বয়স বড়জোর 26 কি 27 হবে। কক্সবাজার যাবে কিনা জিজ্ঞাসা করলাম। যাবে। উঠে বসতেই ট্যাক্সি ছাড়ল ও কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। বেশ কিছুক্ষণচুপচাপ বসে থাকলাম। কিন্তু কতক্ষণ আর চুপচাপ বসে থাকা যায়? তাই ঠিক করলাম ড্রাইভার ছেলেটার সাথেই আলাপ জমাবো। “নাম কি তোমার?“ আলাপ জমানোর প্রথম পদক্ষেপ হল প্রথমে অন্যজনের নাম জিজ্ঞাসা করা, তাই নাম দিয়েই আলাপ শুরু করলাম আমি। “জনি,“ একটু হেসে উত্তর দিল সে।ওর কাছ থেকে জানলাম ও গ্রাজুয়েশন করেছে। কিন্তু কোনও চাকরি না পেয়ে শেষে ট্যাক্সি চালানো শুরু করেছে। আলাপ করতে করতেই চারদিকের অন্ধকারাচছন্ন দৃশ্য দেখতে লাগলাম আমি। এক ঘন্টা হয়ে গেছে প্রায়। সিটে হেলান দিয়ে ঝিমাতে লাগলাম আমি। হঠাৎ একটা ঝাঁকুনিতে উঠে বসলাম। “কি ব্যাপার, জনি?“ জিজ্ঞাসা করলাম আমি। “টায়ার পাংচার হয়ে গেছে, স্যার। গাড়িতে এক্সট্রা কোন টায়ারও নাই,“ বিব্রত ভঙ্গিতে উত্তর দিল জনি। “সেকি? এখন কি করব?“ কিছুটা রাগতো স্বরে বললাম আমি। “একটা ফোন করা লাগবে, স্যার“। “ ফোন এখানে কোথায় পাব। নির্জন রাস্তা ছাড়া কোনও বাড়িঘর বা দোকানপাটতো চোখে পড়ছেনা।“ বললাম আমি। হঠাৎ একদিকে আঙুল তুললো জনি “ঐ দেখেন স্যার একটা বাড়ি“। ওর নির্দেশিত দিকে তাকালাম আমি। সত্যিই তো একটা বাড়ি দেখা যাচ্ছে। “জনি চলতো দেখি ওই বাড়িতে টেলিফোন পাওয়া যায় কিনা?“ বললাম আমি। বেশী দূরে না বাড়িটা। তবে আমদের অবস্থান থেকে বাড়িটা পর্যন্ত ঘন ঝোপঝারে ভরা। বাড়িটাতে পৌঁছে চারদিকে তাকালাম দরজার খোঁজে। পেয়েও গেলাম দরজাটা। ডোরবেলের খোঁজ করলাম দরজার আশেপাশে, কিন্তু পেলাম না।না। “চুলোয় যাক ডোরবেল,“ বলেদরজায় নক করল জনি। ভেতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ পেলাম না। এবার জোরে জোরেদরজায় বাড়ি দিতে লাগল ও। একটু পর ভিতর থেকে মৃদু পায়ের আওয়াজ পেলাম। ভীত মুখে বয়স তিরিশেক একজন মহিলা দরজা খুলে দিল। সন্দেহ ভরা দৃষ্টি নিয়ে আমদের দুজনকে দেখল। “কে আপনারা?“ ভীত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন তিনি। আমি আমাদের সব সমস্যার কথা খুলে বলতেই ভিতরে ডাকলেন আমাদের। তারপর জনকে দেখিয়ে দিলেন কোন ঘরে টেলিফোন আছে। জন চলে গেল টেলিফোন করতে। ভদ্রমহিলা আমাকে সোফায় বসতে বললেন। বসে থেকে ঘরের চারদিকে চোখ বুলাতে লাগলাম আমি। দেয়ালে দেখলাম ঐ ভদ্রমহিলা এবং এক ভদ্রলোকের ছবি। আমাকে ছবির দিকে তাকাতে দেখে মহিলা নিজেই বললেন “উনি আমার স্বামী, গত বছর সড়কদুর্ঘটনায় মারা গেছেন।” “ওহ! আমি দুঃখিত।” উঁনাকে এই বিষয়ে আর কোন প্রশ্ন করে বিব্রত করতে চাইলামনা। “ আপনারা বসুন, আমি চা নিয়ে আসি,” আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েউনি দ্রুত রান্নাঘরের দিকে চলে গেলেন। জনি এখনওআসেনি। চুপচাপ বসে আছি। এমন সময় সামনের ঘরের দরজা খুলে গেল। ভেতর থেকেবের হয়ে আসলো একজন লোক। তাকে দেখেই চমকে উঠলাম আমি। চট করে ছবির দিকে তাকালাম, না কোনও সন্দেহ নেই। ছবির ঐ ভদ্রলোক। ভদ্রলোক আমাকে দেখে অবাক হলেন। “কে আপনি, আমার বাসায় ঢুকলেন কীভাবে?”এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন তিনি। “আপনি,” ওনার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলাম, “আপনি জীবিত আছেন? কিন্তু উনি যে বললেন.........” “আমি জীবিত আছি মানে? কি বলতে চাইছেন আপনি,” বিস্ময় ফুটে উঠল তার চেহারায়। “আপনার স্ত্রী বললেন আপনি মারা গেছেন,” বললাম আমি। রাগ ফুটে উঠল তার চেহারায়,“ইয়ারকি করছেনআপনি আমার সাথে? কি যাতা বলছেন আমার মৃতা স্ত্রী সম্পর্কে?”
“মৃতা স্ত্রী,” বোমা ফাটলযেন আমার কানের পাশে,“কি সব উল্টো পাল্টা কথা বলছেন আপনি, আপনার স্ত্রীতো বেঁচে আছেন। চা বানাতেগেছেন আমাদের জন্য,“ চেঁচিয়ে উঠলাম আমি। “দেখুন যথেষ্ট হয়েছে, একেতো বিনা অনুমতিতে আমার বাড়িতে ঢুকেছেন, আবার আমার মৃতা স্ত্রী সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছেন। আমি..........।” কথা শেষ করতে পারলেননা উনি কারণ জনি এসে দাঁড়িয়েছে দরজার সামনে। অবাক হয়ে জনির দিকে তাকালেন তিনি। “তুমি কে,” তার কন্ঠে স্পষ্ট বিরক্তি “ কেউ কি আমকে বলবে কি হচেছ এখনে?” “দেখুন মিস্টার....... ,” “আমান, আমি আমান চৌধুরি,” ধরিয়ে দিলেন তিনি। “ওকে, মিস্টার আমান চৌধুরি, দেখুন আমদের গাড়ির টায়ার আপনার বাড়ির সামনে এসে পাংচার হয়ে যায়, আমরা আপনার দরজা নক করতে আপনার স্ত্রী দরজা খুলে দেয় আরআমকে এখানে বসায়ে রেখে উনি চা বানাতে গেছেন, দয়া করে রান্নাঘরে যেয়ে উনাকে জিজ্ঞাসা করুন।” “আমি জানিনা আপনি কি বলছেন, কিন্তু আমার স্ত্রী গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন,” বললেন আমান চৌধুরি। “What the hell you are talking about,” প্রায় চেঁচিয়ে উঠলাম আমি, “আমরা একটু আগে উনারসাথে কথা বলেছি, জনি তুমিই বল।” “ আমি জানিনা আপনারা নেশাকরেছেন কিনা কিন্তু আমার স্ত্রী গতবছরই মারা গেছে।” “Please trust me, MR. Aman, আমরা দুজন একসাথেভুল দেখতে পারিনা।” “তাহলে আপনারা নিশ্চয়ই ওর আত্মাকে দেখেছেন,” রাগসরে গিয়ে হাসি হাসি হয়েউঠল তার মুখটা। “আত্মা! কি বলছেন আপনি?” “ঠিকই বলছি, কারণ এখন আমিওর আত্মাকে আপনাদের পিছনে দেখতে পাচ্ছি।” পিছনে ঘুরেই চমকে গেলাম আমরা, ঐ মহিলাই হাস্যজ্বলমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। “সরি মিস্টার..... , ওহ আপনার নামটাই তো জানা হয়নি, যাইহোক আমি পলি চৌধুরী, আমানের স্ত্রী।” হাসিমুখে বললেন উনি। “ আমরা সত্যিই দুঃখিত মিস্টার.......” জিজ্ঞাসার ভঙ্গিতে আমান চৌধুরি তাকালেন আমার দিকে। “রহমান, আমি জুয়েল রহমান।” নাম বললাম আমি। “ওকে, মিস্টার জুয়েল রহমান, আমরা সত্যিই দুঃখিত, জাস্ট একটু ফান করলাম আপনাদের সাথে।” “ফান?” বুঝতে না পেরে জিজ্ঞাসা করলাম আমি। “হ্যা, ফান। আসলে আমরা দুজন লোকালয় থেকে অনেক দূরে থাকি।দুজনের সংসার। জরুরী কাজ ছাড়া শহরে যাওয়া হয় না খুব একটা। মানুষের সাথে খুব বেশী মেশাও হয় না। একেবারে রসকষহীন জীবনযাপন করি। তাই জানালা দিয়ে আপনাদের আসতে দেখে ভাবলাম একটু ফান করা যাক। তাই দুজনে একটু ভূতের অভিনয় করলাম। যাইহোক ভাই, কিছু মনে করেন না।” হাসলেন আমান চৌধুরি। হাসলাম আমিও। এতক্ষণে সব বুঝতে পারলাম। জনির মুখটা ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে গেছিল এইসব কাণ্ড কারখানা দেখে। এবার সব কিছু বুঝতে পেরে শান্ত হয়ে আমার পাশে এসে বসল। মিসেস আমান আমাদের চা নাশতা পরিবেশন করলেন। একটু পর দরজায় শব্দ হল। মেকানিক এসে গেছে। দশ মিনিটও লাগলনা টায়ার পাল্টাতে। মিস্টার এবং মিসেস আমানকে বিদায় জানায়ে আমি আর জনি আবার রওনা হলাম। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম সাড়ে দশটা বেজে গেছে। “স্যার, খুব ভয় পেয়েছিলেন বুঝি,” জনি জিজ্ঞেস করল। “ভয়? হেসে উঠলাম আমি। “এই জুয়েল রহমান কখনও ভয় পায়না, জনি। আমি যদিপৃথিবীতে কিছু অবিশ্বাস করি তা হল ভূত আর ঈশ্বর।” জনি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাল। তাকাক। সবাই তাকায়। আমার এতে কিছু যায় আসে না। “স্যার, ভূতও আছে, ঈশ্বরও আছে। আপনি এটা অস্বীকার করতে পারেননা।” জনির কথার ধরন দেখে অবাক হলাম।“আচ্ছা? তুমি এত নিশ্চিত হচ্ছ কীভাবে?কীভাবে তুমিএত জোর গলায় বলছ যে ভূত আছে?” হঠাৎ গাড়ি একটা জোরে ঝাঁকি খেয়ে থেমে গেল। আমার দিকে ঘুরলো জনি। ধ্বক করে উঠল আমার বুকটা।দেখলাম যেখানে জনির চোখজোড়া ছিল সেখানে এখন শুধু শুন্য কোটর ভয়ংকর ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। “আমি এত জোর দিয়ে বলছি কারণ আমি নিজেই ভূত, স্যার।” ঘড়ঘড়ে কন্ঠে বলল জনি। হঠাৎ দেখলাম জনির চামড়া আস্তে আস্তে খসে পরতে লাগল। ঠোঁট দুটো খসে গিয়ে সেখানে উঁকি দিল ভয়ংকর কাল দাঁতসহ কুৎসিত লাল মাড়ি। পচা মাংসের তীব্র গন্ধে ভরে গেল গাড়ির ভিতরটা। কিছুক্ষণ পরে ওর দেহে আর মাংস বা চামড়া বলে কিছু থাকল না। শুধু একটা ভয়ংকর কঙ্কাল বিদঘুটে ভাবে আমার দিকে চেয়ে থাকল। অজান্তেই তীব্র চিৎকার বেরিয়ে আসল আমার গলা থেকে। কিন্তু এই নির্জন জায়গায় আমার চিৎকার শোনার কেউ নাই। গাড়ির দরজা খোলার চেষ্টা করলাম কিন্তু হাতদুটো যেন অসাড় হয়ে গেছে, যেন কেউ সম্মোহিত করে রেখেছে আমকে। আবার কুৎসিত কঙ্কালটার দিকে তাকালাম। দেখলাম ধীরে ধীরে ওটা একটা কুৎসিত হাতবাড়িয়ে দিচ্ছে আমার দিকে। 9 জুলাই। সন্ধ্যা 7 টা বাজছে প্রায়। আমি চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টের সামনে ট্যাক্সির ভিতর বসে আছি। অপেক্ষা করছি একজন প্যাসেঞ্জারের জন্য। শুধু আমি না আমার মত আরও অনেক ভূত অপেক্ষা করছে ট্যাক্সি নিয়ে। একজন প্যাসেঞ্জার পেলেই তাকে নিয়ে রওয়ানা হয়ে যাব। চট্টগ্রাম হাইওয়ে থেকে বেশ কিছুটা দূরে একটা নির্জন জায়গায় নিয়ে তাকে খুন করব যেভাবে জনি কাল আমকে খুন করেছিল। আস্তেআস্তে প্রচুর ভূত বাড়াতে হবে আমাদের দলে। আফটারঅল কিছুদিন পরে পৃথিবীর সব মানুষ খুন করেআমরা ভূতেরাই তো পৃথিবীর উপর রাজত্ব করব। এখন আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি। এখন আমি আস্তিক। একজন আস্তিক ভূত।
প্রিয় বন্ধুরা ।'মাসিক ভৌতিক'এর নভেম্বর ২০১১সংখ্যা এখানেই শেষ ।আশা করি এবারের সংখ্যাটি তোমাদের ভাল লাগবে ।আর হ্যা মাসিক ভৌতিকের ডিসেম্বর সংখ্যায় লেখা পাঠাতে যেন ভুলোনা ।লেখা পাঠানোর শেষ তারিখঃ ২৩/১১/২০১১ ।লেখা পাঠাবার ইমেইলঃ Jabed.bhoiyan@gmail.com

pacman, rainbows, and roller s